প্রতীকী ছবি।
করোনা অতিমারির পরিস্থিতির কারণে পুলিশ অনুমতি দেয়নি। তা সত্ত্বেও আজ, সোমবার দলের রাজ্য দফতর থেকে মিছিল করবে বিজেপি। দলের রাজ্য মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য রবিবার বলেন, “বিজেপি কোনও হরিনাম সংকীর্তনের দল নয়। পুলিশ তার কাজ করবে। আমরা আমাদের কাজ করব।” শমীকের এই মন্তব্যকে আইনশৃঙ্খলা ভাঙার প্রচ্ছন্ন হমকি বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকেই। তাৎপর্যপূর্ণ হল, মিছিলের গন্তব্যও এ দিন জানায়নি বিজেপি। দলের রাজ্য সহ সভাপতি রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মিছিল বেরোবে দলের রাজ্য দফতর থেকে। কোথায় শেষ হবে, তা সোমবার সকালে জানা যাবে।” রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের অনুমান, মিছিলের গন্তব্য গোপন রাখার পিছনেও ‘সুচিন্তিত’ পরিকল্পনা থাকতে পারে। রাজুর অবশ্য দাবি, “রাজনৈতিক দল গোলমাল করতে যাবে কেন?”
তৃণমূলের রাজ্য মুখপাত্র কুণাল ঘোষ এ প্রসঙ্গে মনে করিয়ে দিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতির কারণ দেখিয়েই ত্রিপুরার বিজেপি সরকার সে রাজ্যে তাঁদের দলের কর্মসূচিতে বারে বারে বাধা দিয়েছে। কুণাল বলেন, “ত্রিপুরায় যে ওই আইন দেখিয়েই আমাদের কর্মসূচি বন্ধ করিয়েছিল, সেটা কি বিজেপির মনে থাকে না? ত্রিপুরায় তো ওদেরই সরকার। তাদের থেকে আইনের বইগুলো নিয়ে একটু পড়ে নিক। তা হলেই বুঝতে পারবে এখানে কোন আইনে ওদের মিছিলে অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না।”
পেট্রোল, ডিজেলের উৎপাদন শুল্কে কেন্দ্রীয় সরকার ছাড় দিলেও রাজ্য কেন তাদের প্রাপ্য ভ্যাটে ছাড় দিচ্ছে না, সেই প্রশ্ন তুলে আজ মিছিলের কর্মসূচি নিয়েছে বিজেপি। মিছিলের নেতৃত্বে থাকবেন দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্য বিজেপির সহ সভাপতি রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বলেন, “পেট্রোল, ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দু’বেলা উঠতে বসতে কেন্দ্রের সমালোচনা করেছেন। এখন কেন্দ্র মানুষকে স্বস্তি দিতে তাদের প্রাপ্য শুল্কে ছাড় দিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে বেশ কিছু রাজ্যও পেট্রোল, ডিজেলের উপর তাদের প্রাপ্য করে ছাড় দিয়েছে। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী এখন নিশ্চুপ কেন? পেট্রোল, ডিজেলের উপরে রাজ্য যে ভ্যাট নেয়, তাতে ছাড় দিয়ে তিনিও মানুষের পাশে দাঁড়ান।”
তৃণমূলের রাজ্য মুখপাত্র কুণাল পাল্টা বলেন, “রাজ্য সরকার সব সময় মানুষকে স্বস্তি দেয়। বিজেপিকে রাজ্য সরকারের কর্তব্য শেখাতে হবে না। কেন্দ্র কেন পেট্রোপণ্যের মূল দাম কমাচ্ছে না, সেটা আগে বলুক। আর কেন্দ্র পেট্রোল, ডিজেলের উপরে রাজ্যের চেয়ে অনেক বেশি কর নেয়। সেখানে তারা সামান্য ছাড় দিয়েছে। কেন্দ্র আগে সেই কর কমিয়ে রাজ্যের সমান করুক, তার পর কথা বলবে।”
পুলিশ বিজেপির আজকের ওই কর্মসূচিতে অনুমতি না দেওয়ার কথা ঘোষণা করেনি। কিন্তু পুলিশ সূত্রের খবর, করোনা আবহে কোনও সভা, মিছিলেই অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। তাই এ ক্ষেত্রেও দেওয়া হয়নি।