লুচি খাওয়ার পরেই জল পিপাসা পায়? ছবি: সংগৃহীত।
খাবার খাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে জল খেতে বারণ করেন পুষ্টিবিদেরা। তা সত্ত্বেও টেবিলে রাখা জলভর্তি বোতল কিংবা গ্লাসের দিকে হাত চলে যায়। বিশেষ করে রুটি, পরোটা, লুচি কিংবা পাউরুটি খাওয়ার এমন প্রবণতা তৈরি হয়। অনেকেই হয়তো মনে করেন, খাওয়ার পরেই তৎক্ষণাৎ জলের গ্লাসে চুমুক দেওয়া ‘বাজে’ অভ্যাসগুলির মধ্যে একটি। তবে গমজাত খাবার খাওয়ার পর তেষ্টা বৃদ্ধি পাওয়ার নেপথ্যে নানাবিধ কারণ থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন বেঙ্গালুরুর ফর্টিস হাসপাতালের চিকিৎসক রিঙ্কি কুমারি।
তাঁর মতে, “গমজাত খাবারে গ্লুটেন নামক এক ধরনের প্রোটিন রয়েছে। যা শরীরে প্রদাহজনিত সমস্যা সৃষ্টি করে। ফলে ফ্লুইডের পরিমাণ কমতে থাকে। শরীর জলের ঘাটতি পূরণ করার জন্য মস্তিষ্কে সঙ্কেত প্রেরণ করে। ফলে তীব্র পিপাসা অনুভূত হয়। আবার গ্লুটেনসমৃদ্ধ খাবারের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বেশি থাকায় তা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ঘন ঘন মূত্রত্যাগের বেগ আসে। সেই কারণেও জল তেষ্টা পেতে পারে।” গমজাত খাবার অর্থাৎ, রুটি, পরোটা, লুচি, পাউরুটি, পিৎজ়া, পাস্তা, এমনকি বিস্কুটেও গ্লুটেন থাকে। পাশাপাশি, এই ধরনের খাবারে সোডিয়াম, কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণও বেশি থাকে। যা পরিপাক করতে অনেকটা পরিমাণ জলের প্রয়োজন হয়।
এই ধরনের খাবার খাওয়ার পর জল খেলে কি সমস্যা বাড়তে পারে?
গ্লুটেনজাতীয় খাবারে যদি অ্যালার্জি না থাকে, সে ক্ষেত্রে তা নিরাপদ। তবে গমজাত খাবার খাওয়ার পর অতিরিক্ত জল খেলে হজম সংক্রান্ত সমস্যা হতে পারে। অতিরিক্ত জল খেলে পরিপাকতন্ত্রের উপর চাপ পড়ে। ফলে প্রদাহজনিত সমস্যা বৃদ্ধি পায়। তাই পুষ্টিবিদেরা কোনও কিছু খাওয়ার অন্তত আধ ঘণ্টা পরে এক-দু’গ্লাস জল খাওয়ার পরামর্শ দেন।
এই সমস্যা থেকে মুক্তির উপায় কী?
১) পুষ্টিবিদেরা বলছেন, খাবার খাওয়ার আধ ঘণ্টা আগে বেশ খানিকটা জল খেয়ে নেওয়া যেতে পারে।
২) যে সব গমজাত খাবারের গ্লাইসেমিক ইনডেস্ক কম, সেই সব খাবার বেছে নিতে পারেন।
৩) প্রক্রিয়াজাত খাবার খেলেও এই ধরনের সমস্যা হতে পারে। তার বদলে ফাইবারে সমৃদ্ধ খাবার বেছে নিতে পারেন।
৪) কৃত্রিম চিনি দেওয়া খাবার কিংবা পানীয় খাওয়ার পরেও ঘন ঘন জল তেষ্টা পেতে পারে। তাই এই ধরনের খাবার বা পানীয় বুঝে খেতে হবে।
৫) গমজাত খাবার খাওয়ার পর যদি খুব তেষ্টা পায়, সে ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিক-সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া যেতে পারে।