—প্রতীকী চিত্র।
প্রৌঢ়কে খুনের অভিযোগে তাঁর স্ত্রী এবং কন্যাকে দোষী সাব্যস্ত করল নদিয়ার আদালত। শনিবার রানাঘাটের অতিরিক্ত জেলা দায়রা আদালতের বিচারক সৌমেন গুপ্ত ওই দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন।
আদালত সূত্রে খবর, ২০১৫ সালে খুন হন সমর বসাক নামে এক প্রৌঢ়। ফুলিয়া পুলিশ ফাঁড়ির মাঠপাড়া এলাকার বাসিন্দা সমর কালীপুজোর বিসর্জনের শোভাযাত্রা থেকে ফিরে টিনের বাড়ির একটি ঘরে শুয়েছিলেন তিনি। পাশের ঘরে ছিলেন স্ত্রী কল্পনা বসাক এবং কন্যা সুপ্রিয়া বসাক। পর দিন সকালে সমরের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। প্রতিবেশীরা আঙুল তোলেন মৃতের স্ত্রী এবং কন্যার দিকে। পরে মৃতের স্ত্রী এবং মেয়ের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগে মামলা দায়ের হয় থানায়। অভিযোগ করেন মৃতের ভাই। সেই মামলায় ১৫ জন সাক্ষী সাক্ষ্যদান করেন। তার ভিত্তিতে প্রায় নয় বছর পুরনো ওই মামলায় শুক্রবার মৃতের স্ত্রী এবং মেয়েকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। শনিবার রায় ঘোষণা করেন বিচারক।
তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, পারিবারিক বিবাদের জেরেই খুন হন সমর। ওই প্রৌঢ় জানতে পারেন স্ত্রী এবং কন্যার বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের কথা জেনে ফেলেছিলেন ওই প্রৌঢ়। ২০১৫ সালে কালীপুজোর রাতে পারিবারিক অশান্তি চরমে ওঠে। স্ত্রী এবং কন্যার সঙ্গে ঝগড়া হয় সমরের। তার পরেই মা-মেয়ে মিলে সমরকে খুন করেন। তদন্তে উঠে আসে, সে দিন রাতে শোয়ার ঘরে আগে থেকেই মশলা বাটার জন্য ব্যবহৃত নোড়া লুকিয়ে রেখেছিলেন সমরের স্ত্রী এবং মেয়ে। বিসর্জনের শোভাযাত্রা শেষে বাড়ি ফিরে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন প্রৌঢ়। প্রথমে সমরকে শ্বাসরোধ করে খুনের চেষ্টা করা হয়। পরে ভারী নোড়া দিয়ে সমরের মাথায় একাধিক বার আঘাত করেন কল্পনা এবং সুপ্রিয়া। মৃতের স্ত্রী এবং কন্যাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গিয়ে একাধিক অসঙ্গতি পায় পুলিশ। মৃতের ভাই বৌদি এবং ভাইঝির বিরুদ্ধে থানায় খুনের অভিযোগ করেন। গ্রেফতারির পর দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদে মা-মেয়ে নিজেদের অপরাধের কথা স্বীকার করেন। আদালতের চার্জশিট জমা পড়ার পর ওই মামলার বিচার প্রক্রিয়া চলে।
শনিবার আদালতের রায়ে খুশি মৃতের প্রতিবেশীরা। যদিও ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে যাবেন বলে জানিয়েছেন আসামিদের পক্ষের আইনজীবী।