পাঁচথুপি স্বাস্থ্যকেন্দ্র। নিজস্ব চিত্র
জেলার অনেক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র কিংবা গ্রামীণ হাসপাতাল ধুঁকছে, এমন অভিযোগ প্রায়ই শোনা যায়। সেখানে ব্যতিক্রম বড়ঞা ব্লকের পাঁচথুপি স্বাস্থ্যকেন্দ্র। গ্রামবাসীদের দাবি, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যে ধরনের চিকিৎসা পরিষেবা কাঙ্ক্ষিত, তার প্রায় সবটাই মেলে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, পাঁচথুপির এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ওপর মুনিয়াডিহি, টগরা, ফুফুরার মতো আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দা নির্ভরশীল। একজন চিকিৎসক, দু’জন নার্স, একজন ফার্মাসিস্ট এবং চতুর্থ শ্রেণির একজন কর্মী এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রয়েছেন। প্রতিদিন সকাল থেকেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বাইরে রোগীদের লম্বা লাইন পড়ে। শয়ে শয়ে রোগী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ডাক্তার দেখান। লকডাউনে অন্যত্র যাওয়ার সুযোগ না থাকায় রোগীর ভিড় রোজই বাড়ছে। করোনা নিয়ে আতঙ্কিত গ্রামবাসীদের শুধু বরাভয় দেওয়াই নয়, যে কোনও ধরনের অসুখে স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই তাঁদের চিকিৎসা যাতে করা যায়, সেই চেষ্টা করেন চিকিৎসকরা। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিষেবায় খুশি সাধারণ মানুষও। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, মাস খানেক আগে পর্যন্ত বহির্বিভাগে চিকিৎসার সুযোগ মিলছিল। কিন্তু বর্তমানে করোনাভাইরাসের আতঙ্কে হাসপাতালে রোগী ভর্তি রেখে চিকিৎসাও হচ্ছে। এ জন্য আপাতত দু’টি বেড রাখা হয়েছে হাসপাতালে। প্রয়োজনে রোগীদের সেখানে পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা বাবাই চৌধুরী বলেন, “আগে শুধু বহির্বিভাগে চিকিৎসা হচ্ছিল। এখন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ায় রোগী ভর্তিও নেওয়া হচ্ছে। এতে এলাকার মানুষ উপকৃত। এতদিন গুরুতর কোনও অসুখ হলে আমাদের সাত কিমি দূরে বড়ঞা গ্রামীণ হাসপাতালে দৌড়তে হত। তবে লকডাউনে গাড়িঘোড়া বন্ধ। তাই বাড়ির কাছে রোগী ভর্তির ব্যবস্থা হওয়ায় খুবই সুবিদা হয়েছে।’’ একই সুর স্থানীয় বাসিন্দা রাজা দাসের গলায়। তিনি বলেন, “এখন করোনাভাইরাসের জন্য সকলেরই আতঙ্কে দিন কাটছে। সেই সময় পাঁচথুপি হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা যে পরিষেবা দিচ্ছেন, সেটা সত্যিই প্রশংসার।” বড়ঞা ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক চয়ন হীরা বলেন, “শুধুমাত্র স্থানীয় মানুষদের ভরসা জোগাতে ওই হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা সারাক্ষণ রোগীদের চিকিৎসা করছেন। এটা প্রশংসনীয় উদ্যোগ। গ্রামবাসীদের স্বার্থেই চিকিৎসক ও স্বাস্থকর্মীরা তাঁদের সর্বদা বোঝাচ্ছেন।’’