নিহত রুবেল শেখ। নিজস্ব চিত্র।
কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হল মুর্শিদাবাদের নবগ্রামের গুলিবিদ্ধ তৃণমূল কর্মীর। মঙ্গলবার রাতে পিকনিক চলাকালীন গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন রুবেল শেখ নামে ওই তৃণমূল কর্মী। ওই ঘটনায় নবগ্রাম ব্লকের তৃণমূল সভাপতি এনায়েতুল্লার বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছে রুবেলের পরিবার। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ওই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। ইতিমধ্যেই ওই তৃণমূল নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার রাতে মুর্শিদাবাদের নবগ্রামের বিল বসিয়া এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন রুবেল। পিকনিক চলাকালীন অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা তাঁকে গুলি করে বলে অভিযোগ। রুবেলকে প্রথমে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। মঙ্গলবার ভোরের দিকে রুবেলের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে। সেখান থেকে তাঁকে ভর্তি করানো হয় সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। বুধবার রাত দেড়টা নাগাদ মৃত্যু হয় রুবেলের। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জেরেই মৃত্যু বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে।
রুবেল নবগ্রাম ব্লকের তৃণমূল সভাপতি এনায়েতুল্লাহর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। তাঁর বিরুদ্ধেই অভিযোগের আঙুল তুলেছে পরিবার। নিহত তৃণমূল কর্মীর মা মবিনা বিবি বলেন, ‘‘আমার ছেলে এনায়েতুল্লার সঙ্গে থাকত সব সময়। মঙ্গলবার রাতে এনায়েতুল্লা এবং আরও ৫ জনের সঙ্গে ওরা পিকনিক করছিল। ও কী ভাবে খুন হয়েছে ওরা সব জানে।’’ একই সুর রুবেলের বাবা গোলাম রসুলেরও। তাঁর দাবি, ‘‘সারারাত ছেলে বাড়িতে ফেরেনি। ভেবেছিলাম এনায়েতুল্লার সঙ্গেই আছে। মাঝে মাঝে ওর সঙ্গে থাকতও। সকালে খবর পেলাম ছেলেকে গুলি করেছে। এনায়েতুল্লাই সব বলতে পারবে।’’ এনায়েতুল্লার দাবি, ‘‘দলের কর্মীর মৃত্যুতে আমি এমনিতেই মর্মাহত, তদন্তে পুলিশকে সব রকম সহযোগিতা করব।’’
রুবেল বহরমপুর কলেজ থেকে স্নাতক উত্তীর্ণ হয়ে জমি ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছিলেন। সেই সূত্রেই তাঁর সঙ্গে এনায়েতুল্লার পরিচয় বলে রুবেলের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে। আরও জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত থেকে খোঁজ নেই এনায়েতুল্লার। রুবেলের মা এবং বাবা এনায়েতুল্লার বাড়ি গেলেও তাঁর খোঁজ পাওয়া যায়নি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এনায়েতুল্লার তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, তিনি রুবেলের চিকিৎসার জন্য কলকাতায় রয়েছেন। বুধবার দিন ভর দফায় দফায় এনায়েতুল্লাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। এনায়েতুল্লার পাল্টা দাবি, ‘‘দলীয় কর্মীর মৃত্যুতে আমি এমনিতেই মর্মাহত। তদন্তে পুলিশকে সব রকম সহযোগিতা করব।’’
রুবেল হত্যাকাণ্ডের তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার সুপার সুরিন্দর সিংহ। বেশ কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।