ভাঙড়ে সতর্ক পুলিশি প্রহরা। পাল্টা আন্দোলনের কর্মসূচি শীঘ্রই জানানো হবে, জানাল আইএসএফ। নিজস্ব চিত্র।
বিধায়ককে সময়ে মুক্তি না দিলে ‘বৃহত্তর আন্দোলন’ হবে, শান্তি মিছিলে জানিয়ে দিয়েছিল ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ)। বৃহস্পতিবার সেই সময় শেষ হচ্ছে। ব্যাঙ্কশাল আদালতের নির্দেশে আগামী আরও ১৩ দিন জেলেই থাকতে হবে আইএসএফ নেতা তথা ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিকে। ঘণ্টা কয়েক আগের সেই নির্দেশের পর থেকেই আতঙ্কে ভুগছে ভাঙড়।
যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের অধীনে বিধানসভা কেন্দ্র ভাঙড়। সেখানে তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামের সঙ্গে গণ্ডগোল এবং পরবর্তীতে দলীয় অফিস ভাঙচুরের প্রতিবাদে গত ২১ জানুয়ারি ধর্মতলায় বিক্ষোভ দেখায় আইএসএফ। রাজ্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতি-সহ একাধিক বিষয়ে অভিযোগ তুলে ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকির নেতৃত্বে অবস্থান-বিক্ষোভ শুরু হয় কলকাতার রাজপথে। সেই কর্মসূচিতে পুলিশের উপর হামলা এবং সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর-সহ একাধিক অভিযোগে নওশাদ-সহ ১৯ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার পর থেকেই বিধায়কের মুক্তির দাবিতে সরব আইএসএফ। সম্প্রতি কলকাতার রাজপথে শান্তি মিছিলও করে তারা। সেদিনই আইএসএফ সমর্থকেরা জানিয়ে দেন, ২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নওশাদকে মুক্ত না করলে আরও বড় আন্দোলন হবে। বুধবার ১ ফেব্রুয়ারি অবশ্য ব্যাঙ্কশাল আদালত জানিয়ে দেয় ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেলেই থাকবেন আইএসএফের বিধায়ক-সহ অন্যান্য অভিযুক্তেরা। বৃহস্পতিবার স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, এর পর নেতার মুক্তির দাবিতে কী ভাবে আন্দোলনে নামতে চলেছে আইএসএফ। আইএসএফের তরফে দলের নেতা লক্ষ্মী হাঁসদা বলেন, ‘‘এখনই সেই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি। তবে আইএসএফের শীর্ষ নেতৃত্ব এ নিয়ে আলোচনা করছে। আপাতত বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টের সময় বেগমপুর, আরামবাগ এবং পুরশুরায় অবস্থান বিক্ষোভের কর্মসূচি রয়েছে। বাকিটা পরে জানিয়ে দেওয়া হবে।’’
ভাঙড়ের স্থানীয় সূত্রে অবশ্য খবর, বিধায়কের ১৫ দিন জেল হেফাজত হওয়ায় কর্মী-সমর্থকেরা ক্ষোভে ফুঁসছেন। ক্যামেরার সামনে কথা না বললেও তাঁরা জানিয়েছেন, মিথ্যা অভিযোগে শাসকদল তাঁদের বিধায়ককে ফাঁসিয়েছে। রাজনৈতিক ভাবে লড়তে না পেরে মিথ্যা মামলা সাজিয়ে জেলে আটকে রাখা হয়েছে নওশাদকে।
তবে এই আতঙ্কের বাতাবরণের মধ্যেই ভাঙড়ে পুলিশি টহল চলছে। কখনও কেএলসি থানা, কখনও কাশীপুর থানা বা লালবাজার থেকেও ভাঙড়ের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে। একাধিক আইএসএফ নেতাকর্মীকে আটক বা গ্রেফতার করা হচ্ছে বলেও খবর। আইএসএফ সমর্থকদের অভিযোগ, পুলিশি অভিযানের জেরে আইএসএফের একাধিক কর্মী-সমর্থক এবং ভাঙড়ের নেতারা নিজেদের বাড়িতেও থাকতে পারছেন না।