টেট পরীক্ষার্থী রীতেশ বিশ্বাস ও মৈনাক বিশ্বাস।
প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নদিয়ার পলাশিপাড়ার বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য। রবিবার সেই পলাশিপাড়া থেকেই একাধিক পরীক্ষার্থী বসতে চলেছেন টেটে। প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতার জন্য যোগ্যতা নির্ণায়ক এই পরীক্ষা ঘিরে শনিবার থেকেই উৎসাহের ছবি দেখা গিয়েছে মানিকের নিজের কেন্দ্রে।
রবিবার প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতার জন্য যোগ্যতা নির্ণায়ক এই পরীক্ষায় বসতে চলেছেন প্রায় ৭ লক্ষ পরীক্ষার্থী। তার মধ্যে রয়েছেন নদিয়ার নাকাশিপাড়ার ঘোড়ায়ক্ষেত্র গ্রামের পরীক্ষার্থী রাহুল মণ্ডল। ওই গ্রামেই বাড়ি মানিকের। বাড়ি থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে রানাঘাট মহাবিদ্যালয়ে আসন পড়েছে রাহুলের। যানজটের সমস্যা এড়াতে অ্যাডমিট কার্ড এবং অন্য জিনিসপত্র নিয়ে রাহুল বেরিয়ে পড়েছেন শনিবারই। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমাদের নিম্নবিত্ত পরিবার। এই প্রথম টেট দিচ্ছি আমি। আমাকে পরীক্ষা খুব ভাল করে দিতেই হবে।’’
পলাশিপাড়ার রামনগরের বাসিন্দা রীতেশ বিশ্বাস। তিনি এ বারের টেট পরীক্ষার্থী। এই আবহে শনিবার থেকে টেট দিতে যাওয়ার প্রস্তুতির ছবি ধরা পড়ল পলাশিপাড়া এলাকায়। রিতেশের বাবা চাষবাসের সঙ্গে যুক্ত। তাঁর কথায়, ‘‘বেসরকারি সংস্থার কাছ থেকে ঋণ নিয়ে আমি শিক্ষক হওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ নিয়েছি। আমাদের এলাকার বিধায়কের নাম জড়িয়েছে দুর্নীতিতে। এখন উনি জেলে রয়েছেন। অনেকে নিয়োগের দাবিতে আন্দোলন চালাচ্ছেন। আমি চাই, এ বার থেকে যেন নতুন করে পথচলা শুরু হয়।’’
কৃষ্ণনগর উচ্চ বিদ্যালয় আসন পড়েছে নদিয়ার পলাশিপাড়ার সাহেবনগরের তরুণ মৈনাক বিশ্বাসের। এই নিয়ে তিন বার টেট দিচ্ছেন মৈনাক। তিনি বলেন, ‘‘২০১৭ সালে প্রাথমিকে টেট পাশ করেছিলাম। নিয়োগ পাইনি। তবে এ বার তো অন্য রকম পরিস্থিতি। এ নিয়ে তদন্ত চলছে। অনেকে জেলেও রয়েছেন। মনে আশা আছে, হয়তো চাকরি পাব।’’
নদিয়া জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, জেলায় এ বার ৪৭ হাজার ৪৩০ জন টেট পরীক্ষার্থী রয়েছেন। গত বারের থেকে প্রায় ২৭ হাজার বেশি। মোট ৮৮টি কেন্দ্রে পরীক্ষা হবে। প্রতিটি মহকুমায় বিশেষ নজদারি টিমও তৈরি করা হয়েছে। তেহট্টের মহকুমাশাসক মৌমিতা সাহা বলেন, ‘‘সুষ্ঠু ভাবে যাতে পরীক্ষা পরিচালনা করা যায় সেই মতো সমস্ত প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে একাধিক বার বৈঠক করা হয়েছে। যাতে সমন্বয়ে কোনও বিঘ্ন না হয়।’’ পাশাপাশি, পরীক্ষার দিন পরীক্ষার্থীদের যাতে যানবাহনের সমস্যা না হয় সেই দিকেও নজর রাখছে প্রশাসন। সেই সঙ্গে পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিতে থাকছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা।