তামিলনাড়ুর মমল্লপুরমের কাছে শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ আছড়ে পড়েছে ঘূর্ণিঝড় মন্দৌস। তার প্রভাব এখনও কাটেনি। এর মধ্যেই নতুন ঘূর্ণিঝড় তৈরির সম্ভাবনার কথা জানাল হাওয়া অফিস। অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হলে আগামী সপ্তাহে আছড়ে পড়তে পারে সেই ঘূর্ণিঝড়।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আগামী ১৩ ডিসেম্বর দক্ষিণ আন্দামান সাগরে একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরির অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তবে কতটা শক্তিশালী হবে সেই ঘূর্ণাবর্ত, তা থেকে ঘূর্ণিঝড় হবে কি না, এ সব বিষয়ে নজর রাখা হয়েছে।
ভারতীয় মৌসম ভবন (আইএমডি)-এর বিজ্ঞানী উমাশঙ্কর দাস টুইটারে লিখেছেন, ‘‘২০২২ সালের ১৩ ডিসেম্বর দক্ষিণ আন্দামান সাগরে তৈরি হতে পারে ঘূর্ণাবর্ত।’’
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ওই ঘূর্ণাবর্ত নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। শক্তি বাড়িয়ে পরিণত হতে পারে ঘূর্ণিঝড়েও। সে দিকে নজর রাখছে ভুবনেশ্বরের আবহাওয়া দফতর। যদিও ঘূর্ণিঝড় তৈরি হবেই— এমন কথা নিশ্চিত ভাবে কেউ বলেননি।
মন্দৌসের প্রভাব কাটতে না কাটতেই ফের ঘূর্ণিঝড় তৈরির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আগেভাগেই তাই প্রস্তুত থাকতে চাইছে প্রশাসন। কড়া নজর রাখছে আবহাওয়া দফতর।
শুক্রবার গভীর রাতেই চেন্নাইয়ের কাছে মমল্লপুরমে আছড়ে পড়েছে মন্দৌস। ঘণ্টায় তখন তার গতি ছিল ৭৫ কিলোমিটার। তার প্রভাবে তামিলনাড়ুতে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। অন্ধ্রপ্রদেশের রায়লসীমাতেও মন্দৌসের প্রভাবে বৃষ্টি হয়েছে।
হাওয়া অফিস জানিয়েছে, ক্রমেই মন্দৌস পশ্চিম এবং উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়েছে। শক্তিক্ষয় হয়েছে তার। শনিবার দুপুরের মধ্যেই গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে সে। দুপুরের দিকে ঘণ্টায় ঘূর্ণিঝড়ের গতি ছিল আট কিলোমিটার।
শনিবারের মধ্যে মন্দৌস নিম্নচাপে পরিণত হবে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস। সারা দিন তামিলনাড়ুর বিভিন্ন জেলায় চলবে বৃষ্টি।
মন্দৌসের প্রভাবে খুব বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে একেবারেই যে হয়নি, তা-ও বলা যাবে না। প্রচুর গাছ উপড়ে গিয়েছে। ভেঙে গিয়েছে ঘরবাড়ি। গোটা তামিলনাড়ুতে মারা গিয়েছেন চার জন।
চেন্নাইয়ের মাদিপক্কমে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে বলে স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে। মৃতেরা হলেন লক্ষ্মী দেবী এবং তাঁর ভাইপো রাজেন্দ্রন কুমার।
চেন্নাইয়ের সইদাপেটে বাড়ির ছাদ ভেঙে পড়ে একই পরিবারের চার জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
চেঙ্গুলপট্টুতে কয়েকশো গাছ উপড়ে পড়েছে। চেন্নাইতে প্রায় চারশো গাছ উপড়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্টালিন।
গাছ কেটে রাস্তা পরিষ্কারের কাজ শুরু হয়েছে। মমল্লপুরমে উপকূলবর্তী বাড়িগুলির ছাদ ভেঙে গিয়েছে। কোভালাম এবং মমল্লপুরমে বহু নৌকা ভেঙে গিয়েছে।
শনিবার সারা দিনে চেন্নাই বিমানবন্দর থেকে বাতিল হয়েছে ১৩টি অন্তর্দেশীয় এবং তিনটি আন্তর্জাতিক বিমান। কাশিমেদু এলাকা পরিদর্শনে যান মুখ্যমন্ত্রী স্টালিন।