কনেপক্ষের দাবি, পরিবারের পছন্দ ছিল পেশায় মৃৎশিল্পী শঙ্কর পালকে। কিন্তু হবু বরের ‘চেহারার কারণে’ বিয়েতে আপত্তি ছিল মেয়ের। —প্রতীকী চিত্র।
সব কিছু ঠিকঠাক ছিল। বিয়ের তোড়জোড় শুরু হব হব, হঠাৎই এল খবর। ছেলের বাড়ি শুনল পাত্রকে পছন্দ নয় পাত্রীর। কারণ, তাঁর ‘চেহারা খারাপ’। আগে পাঁচ বার বিয়ের সম্বন্ধ ভেঙেছে। ছ’বার বিয়ে ভেঙে যাওয়ার পর আত্মঘাতী হলেন বছর ৩০-এর যুবক। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার শান্তিপুরে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
কনেপক্ষের দাবি, পরিবারের পছন্দ ছিল পেশায় মৃৎশিল্পী শঙ্কর পালকে। কিন্তু হবু বরের ‘চেহারার কারণে’ বিয়েতে আপত্তি ছিল মেয়ের। সে কথাই জানিয়ে দেন তাঁরা। অন্য দিকে, বিয়ের সম্বন্ধ করতে গিয়ে বার বার ধাক্কা খাওয়ায় মানসিক অবসাদের শিকার হন শঙ্কর বলে তাঁর পরিবারের অভিযোগ। এই কারণেই তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন বলে দাবি পরিবারের।
মৃত যুবকের পরিবারের সদস্য অমিয় পাল বলেন, “শঙ্করের বিয়ের জন্য একাধিক বার দেখাশোনা হয়। কিন্তু দাঁত উঁচু, মুখে সৌন্দর্য না থাকায় ওকে পছন্দ করছিল না কেউ। প্রতি বার সম্বন্ধ ফিরে চলে যেত। একাধিক বার এই ঘটনা ঘটে। তাই মানসিক অবসাদে ভুগছিল ও। আজ সকালে আত্মঘাতী হয়েছে ও।”
মৃত শঙ্কর পালের বাড়ি শান্তিপুর হরিপুর পালপাড়া এলাকায়। মৃৎশিল্পী ওই যুবক দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে একাধিক কারখানায় কাজ করতেন। আর্থিক কোনও সমস্যা ছিল না তাঁর। শঙ্করের পরিবারের জানাচ্ছেন, আশপাশের এলাকা এমনকি জেলার বাইরেও শঙ্করের বিয়ের জন্য সম্বন্ধ দেখা হয়। শঙ্কর সংসার করতে চেয়েছিলেন। নিজেও উদ্যোগ নিয়ে বেশ কয়েকটি জায়গায় বিয়ের জন্য পাত্রী দেখতে গিয়েছেন। সব কিছু ঠিকঠাক থেকেও শেষ মুহূর্তে বার বার যুবকের বিয়ে ভেঙেছে। কিছু দিন আগেই আরও একটি সম্বন্ধে ভেঙে যায়। তার পরই অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন শঙ্কর। মঙ্গলবার সকালে ঘর থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। ইতিমধ্যে দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে রানাঘাট মহকুমা পুলিশ আধিকারিক প্রবীর মণ্ডল বলেন, ‘‘একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলার রুজু করে প্রাথমিক তদন্ত শুরু হয়েছে। দেহের ময়নাতদন্ত হবে।’’