Chandannagar

দীর্ঘ আইনি লড়াই শেষে গ্র্যাচুইটি আদায় মিল শ্রমিকের

বিভিন্ন জুট মিলেই শ্রমিকদের গ্র্যাচুইটি দিতে নানা টালবাহানা করেন কর্তৃপক্ষ, এমন অভিযোগ আকছার শোনা যায়।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:২৮
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

কর্মরত অবস্থায় ভদ্রেশ্বরের ডালহৌসি জুট মিলে দুর্ঘটনায় কর্মশক্তি হারিয়েছিলেন বাদল মান্না। সেটা ২৭ বছর আগের কথা। সে সময়ে ওই শ্রমিকের প্রাপ্য গ্র্যাচুইটি দেননি মিল কর্তৃপক্ষ। শেষ পর্যন্ত ওই টাকা তিনি পেলেন দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পরে। কলকাতা হাই কোর্টের রায়ের প্রেক্ষিতে সম্প্রতি বাদলকে গ্র্যাচুইটির টাকা সুদ-সমেত দিয়েছেন জুট মিল কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

বিভিন্ন জুট মিলেই শ্রমিকদের গ্র্যাচুইটি দিতে নানা টালবাহানা করেন কর্তৃপক্ষ, এমন অভিযোগ আকছার শোনা যায়। সংশ্লিষ্ট অনেকেই মনে করছেন, এ ক্ষেত্রে বাদলের বিষয়টিতে আদালতের রায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ওই শ্রমিকের হয়ে দীর্ঘ আইনি লড়াই চালিয়ে এসেছে চন্দননগরের আইন সহায়তা কেন্দ্র। সংগঠনের কর্ণধার বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বহু কল-কারখানার মালিক শ্রমিকদের গ্র্যাচুইটির টাকা দেন না। বহু শ্রমিক কাজ করতে গিয়ে পেশাগত কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন বা দুর্ঘটনায় পড়েন। তাঁদের ক্ষেত্রে টালবাহানা আরও বেশি হয়। বাদলবাবুকে টাকা দিতে হাই কোর্টের নির্দেশের কারণে বহু শ্রমিক আগামী দিনে উপকৃত হবেন।’’

সিঙ্গুরের বাসিন্দা বাদলের বয়স এখন পঞ্চাশ বছরের আশপাশে। তাঁর কথায়, ‘‘সত্যের জয় হল। আইন সহায়তা কেন্দ্র পাশে না থাকলে আমার পক্ষে এই জয় সম্ভব হত না।’’

Advertisement

জানা গিয়েছে, ১৯৯২ সাল থেকে ডালহৌসি জুট মিলে কাজ করতেন বাদল। ১৯৯৮ সালে মিলেই একটি দুর্ঘটনায় তিনি কর্মশক্তি হারান। দীর্ঘ দিন চিকিৎসা চলে। মিল কর্তৃপক্ষের কাছে তিনি গ্র্যাচুইটির টাকার জন্য আবেদন করেন। তাঁরা সেই দাবি পত্রপাঠ নাকচ করে দেন। বাদল এরপরে আইন সহায়তা কেন্দ্রের সাহায্যে শ্রম দফতরে ওই প্রাপ্য টাকার আবেদন জানিয়ে মামলা করেন। কয়েক বছর সেই মামলা চলার পরে শ্রম দফতরের সংশ্লিষ্ট আধিকারিক জানিয়ে দেন, তিনি টাকা পাওয়ার উপযুক্ত নন।

বিশ্বজিতের দাবি, আইন সহায়তা কেন্দ্র আইন বিশ্লেষণ করে দেখায়, কোনও শ্রমিক কাজ করতে করতে মারা গেলে বা অক্ষম হয়ে পড়লে তিনি পূর্ণ মেয়াদ কাজ না করলেও টাকা পাওয়ার যোগ্য। ওই সংগঠনের তরফে বিষয়টি নিয়ে শ্রম দফতরের আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়। বেশ কয়েক বছর মামলা চলে। শেষ পর্যন্ত ২০২২ সালে ওই আবেদনকে মান্যতা দিয়ে চন্দননগরের তৎকালীন উপ-শ্রম কমিশনার কল্লোল চক্রবর্তী ওই শ্রমিকের গ্র্যাচুইটির টাকা সুদ সমেত দেওয়ার নির্দেশ দেন ডালহৌসি কর্তৃপক্ষকে।

সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ওই জুট মিল কর্তৃপক্ষ হাই কোর্টে আবেদন করেন। গত ৮ এপ্রিল হাই কোর্ট সুনির্দিষ্ট রায়ে জানায়, ওই শ্রমিক গ্র্যাচুইটি পাওয়ার যোগ্য। অবশেষে চলতি মাসে বাদলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বকেয়া ওই টাকা পাঠান মিল কর্তৃপক্ষ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement