—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
কৃষ্ণের জন্মের পরের অষ্টমী তিথি। ভাদ্র মাসের সেই শুক্ল অষ্টমী তিথিই হল রাধাষ্টমী। বুধবার রাধারানির জন্মতিথি। রাধিকার জন্মস্থান মথুরার বর্ষাণা। ভাদ্রমাসের শুক্ল অষ্টমী তিথিতে রাজা বৃষভানু এবং তাঁর স্ত্রী কীর্তি স্বর্ণপদ্মের কোল আলো করে শ্রীরাধা তাদের ঘরে এসেছিলেন বলে মনে করে পুরাণ।
রাধাষ্টমী বৈষ্ণব ধর্মালম্বীদের কাছে উল্লেখযোগ্য একটি দিন। এই দিনে বিভিন্ন বৈষ্ণবধামে সকাল থেকেই শুরু হয়েছে পূজার্চনা, কীর্তন, ভজন। সঙ্গে ফুল দিয়ে সাজান হয়েছে বিগ্রহ। নবীন, প্রবীণ বৈষ্ণবরা নিজেদের সাধ্যমতো বৈষ্ণব আখড়াগুলি সাজিয়ে তুলেছেন। এর আগের অষ্টমী ছিল শ্রীকৃষ্ণের জন্মক্ষণ। তাই রাধাষ্টমীর অনুষ্ঠান যেন সেই উৎসবের বৃত্ত সম্পূর্ণ করে। সেই সঙ্গে এই উৎসব শুরু করে দেয় শারদ উৎসব মালা। এর পরেই শুরু হচ্ছে দুর্গাপুজোর চুড়ান্ত প্রস্তুতি।
জেলার বিভিন্ন প্রান্তে রাধাষ্টমী পালিত হল বুধবার আড়ম্বরের সঙ্গে। বহরমপুরের ঘাটবন্দরে গোপীনাথের আখড়া, সৈদাবাদ ফাঁড়ির কাছে শ্যামদাসের আখড়া, সৈদাবাদের ছাপাখানায় রাধামাধবের মন্দিরে রাধাষ্টমী পালিত হয়। সৈদাবাদের বলরাম বাড়ি, বেনোয়ারী গোস্বামী লেনে রাধাবল্লভ বাড়িতেও রাধাষ্টমী পালিত হল বুধবার। শুধু বৈষ্ণব আখড়া বা মঠ, মন্দির নয়। বাড়িতেও রাধাষ্টমীর পুজো হয় সাড়ম্বরে। বহরমপুরের দুর্গা বন্দ্যোপাধ্যায়, সুবর্ণন বন্দ্যোপাধ্যায়, গঙ্গামনি মণ্ডল, প্রজ্জ্বল মিত্র সকলেই বাড়িতে রাধাষ্টমী পালন করেন ভক্তির সঙ্গে। প্রজ্জ্বল মিত্র বলেন, “আগের দিন থেকে ব্রত পালন শুরু করেছি। বুধবার সকালে বিগ্রহকে স্নান করিয়ে নতুন পোষাক পরিয়ে, ফল, মিষ্টান্ন সহযোগে পুজো হয়েছে বাড়িতে।”
বেলডাঙার গৌরাঙ্গ সমিতি, গোবিন্দ বাড়ি, গোঁসাই বাড়ির মতো বৈষ্ণব আখড়াগুলিতে রাধাষ্টমী পালন হচ্ছে। বেলডাঙার বদ্রীনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ সাত দিন ধরে ভাগবত পাঠের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। ভাগবত পাঠ সপ্তাহ চলবে টানা সাত দিন। গৌরাঙ্গ সমিতিতে ভাগবত পাঠের আসর চলছে। এছাড়া গৌরাঙ্গ সমিতিতে রাধাষ্টমী উৎসব চলছে। সকাল থেকে শ্রীরাধিকাকে দুধ, ঘি, মধু, দই দিয়ে স্নান করানো হয়েছে। পরে পুজো, আরতি, ভোগ নিবেদন ও প্রসাদ বিতরণ হয়েছে। ভক্তরা মনে করেন, রাধারানির কৃপা ছাড়া কৃষ্ণ আরাধনা সম্ভব নয়। তাই রাধাষ্টমীতে শ্রীরাধারানির আরাধনা হয় আড়ম্বরের সঙ্গে।” শিক্ষক তপন পুততুণ্ড বলেন, “বুধবার শ্রীরাধার জন্মতিথি। এই তিথিতে বৈষ্ণব আরাধনা চলছে বৈষ্ণব আখড়া গুলিতে। পুজো, অর্চনা, কীর্তন, ভজন সবই চলছে। সেখানে অন্নভোগ, ফলের ভোগ দেওয়া হয়। কচুর শাক, বিভিন্ন তরকারি, পায়েস নিবেদন করা হয়।”