প্রতীকী ছবি।
কামরায় তখন কোনও আসন ফাঁকা নেই। দু’চার জন দাঁড়িয়ে আছেন। একটি লোক আসনের শেষের দিকে বসা যাত্রীকে সরে বসতে বললেন। তিনি তো অবাক। কোথায় সরবেন? আসনে যে তিন জন বসার কথা বলা আছে। মৃদু স্বরে তা জানাতেই কার্যত খেঁকিয়ে ওঠেন মাঝ বয়সী লোকটি। বলেন, “বসে তো আছেন তিন জন। তা হলে চার জন বসলে আপত্তি কোথায়?”
বাকি তিন জন সরে গিয়ে তাঁকে জায়গা দেন। চেনা ছবিটা ফিরে এল। তাঁকে সফল হতে দেখে একই অবস্থান নেন আরও কয়েক জন। দূরত্ব বিধি তখন শিকেয়। ঝাঁকুনি দিয়ে ট্রেন ছাড়তে এক জন অন্য যাত্রীর গায়ের গিয়ে পড়েন। অত্যন্ত বিরক্ত হয়ে সেই যাত্রী দূরত্ব-বিধি নিয়ে নাতিদীর্ঘ বক্তব্য রাখেন। ট্রেন বাদকুল্লা স্টেশনে থামতে হুড়মুড়িয়ে ওঠেন জনা কয়েক। তাঁদের দেখে প্রায় লাফিয়ে উঠে জড়িয়ে ধরেন জনা তিনেক যাত্রী। হই হই করে ওঠেন। বোঝা যায় তাঁরা নিত্যযাত্রী। এত মাস পরে দেখে আবেগ ধরে রাখতে পারেননি।
জানালার ধারে বসেছিলেন বছর চব্বিশের যুবক। মায়াপুরের একটা হোটেলে রান্নার কাজ করতেন। লকডাউনে তাঁর কাজটা গিয়েছে। ট্রেন চালু হতেই তাই চলেছেন বালিগঞ্জে। সেখানে একটা সেন্টার থেকে আয়ার কাজ দেওয়া হয়। তা যদি মেলে সেই আশায় যাচ্ছেন।
ট্রেন ছেড়ে দেয় কল্যাণী স্টেশন থেকে। জানালা দিয়ে তখনও দেখা যায় বিষণ্ণ মুখটা। কলকাতায় গিয়ে কাজটা পাবে তো ছেলেটা?