আবার মাদক-সহ গ্রেফতার! —প্রতীকী চিত্র।
নদিয়ার বেশ কিছু জায়গায় শুরু হয়েছে মাদক কারবার। সোমবার সন্ধ্যায় গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সন্ধ্যা ৭ টা নাগাদ করিমপুরে হেরোইন-সহ এক দুষ্কতীকে হাতেনাতে পাকড়াও করল নারকোটিক বিভাগের আধিকারিকরা।
সোমবার শহরের পুরনো বাসস্ট্যান্ড চত্বরে ওৎ পেতে বসেছিল রাজ্য পুলিশের নারকোটিক বিভাগের বিশেষ দল। সঙ্গে ছিল করিমপুর থানার পুলিশ। হঠাৎ একটি লাল রঙের মোটর সাইকেল দেখে সন্দেহ হতেই আরোহীকে ঘিরে ধরে পুলিশ। তল্লাশি চালিয়ে ওই ব্যক্তির ব্যাগ থেকে উদ্ধার হয় ১.৪২০ গ্রাম বিশুদ্ধ হেরোইন। গ্রেফতার করা হয় ওই ব্যক্তিকে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতের নাম জানারুল ইসলাম। তার বাড়ি মুর্শিদাবাদের সাগর পাড়া থানা এলাকায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, মুরুটিয়া থানা এলাকা থেকে বাংলাদেশে মাদক পাচারের জন্য করিমপুর হয়ে হোগোলবেড়িয়া থানা এলাকার দিকে যাচ্ছিল জানারুল।
বস্তুত, অন্তঃদেশীয় মাদক পাচার চক্রের অন্যতম কেন্দ্র হয়ে উঠেছে কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার পলাশিপাড়া, নাকাশিপাড়া ও কালীগঞ্জ থানা এলাকা। এমনটাই মনে করছেন খোদ নারকোটিক বিভাগের দুঁদে আধিকারিকেরা। পলাশিপাড়া থানা এলাকার ছোট নলদহ, বড় নলদহ, বাউর, লালদিঘি এলাকা মাদক কারবারের মুক্তাঞ্চলে পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দেরও।
সূত্রের খবর, ভিন্রাজ্য থেকে পাচারকারীদের মাধ্যমে হেরোইন তৈরির কাঁচামাল, যেমন— পোস্তর আঠা, মরফিন ইত্যাদি নিয়ে এসে দেশীয় কায়দায় মাদক তৈরি হচ্ছে নদিয়ায়। স্থানীয় ভাবে জেলা জুড়ে বিক্রি তো হচ্ছেই। সেই সঙ্গে অন্যত্রও পাচার হচ্ছে। এমনকি, দেশের গণ্ডি পেরিয়ে নদিয়ায় তৈরি মাদক পৌঁছে যাচ্ছে বাংলাদেশে। কিছু দিন আগে নাকাশিপাড়া থানা এলাকার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর বেথুয়াডহরি টোল প্লাজার কাছ থেকে একটি ট্রাক আটক করে পুলিশ। চলতি বছরের মে মাস নাগাদ পলাশিপাড়ার বড়নলদহ থেকে এক মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করে সিআইডি।
এর আগে ২০১৮ সালের অক্টোবরে এলাকার কুখ্যাত দুষ্কৃতী এবং মাদক কারবারি পিন্টু ও তার ছেলে রশিদ ওরফে বাচ্চু হেরোইন-সহ ধরা পড়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর এলাকায়। তার সঙ্গে ধরা পড়ে জামালউদ্দিন শেখ নামে আর এক মাদক কারবারি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে সিআইডি জানতে পারে নদিয়ার কালিয়াগঞ্জ থানা এলাকার দু’টি গ্রাম থেকে হেরোইন নিয়ে এসে উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ অংশে সরবরাহ হত।
মাদক পাচার চক্রের সঙ্গে বার বার নদিয়া জেলার যোগ প্রসঙ্গে কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) কৃশানু রায় বলেন, ‘‘এই রকম খবর পেলেই তো ব্যবস্থা নেওয়া হয়। বেশ কয়েকটি অভিযানে গ্রেফতার হয়েছে বেশ কয়েক জন।’’