কানে গোঁজা হেডফোন, ট্রেনের ধাক্কায় গেল প্রাণ। — নিজস্ব চিত্র।
গান ভালবাসতেন। সেই গানই কেড়ে নিল প্রাণ। কানে হেডফোন গুঁজে রেল লাইন পেরোতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হল মিঠুন মহলদার নামে বছর ২৮-এর এক যুবকের। সোমবার দুপুরে মুর্শিদাবাদের সুতি থানা এলাকায় ঘটেছে এই দুর্ঘটনা। আচমকা এমন ঘটনায় হতবাক প্রত্যক্ষদর্শীরা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, সোমবার সকালে সুতি থানার খিদিরপুর ছাপ ঘাটি এলাকায় পেশায় মাছ ব্যবসায়ী মিঠুন কানে হেডফোন গুঁজে গান শুনতে শুনতে লাইন পার হচ্ছিলেন। সে সময় ফরাক্কা থেকে আজিমগঞ্জগামী একটি ট্রেন ওই লাইন দিয়ে এগিয়ে আসছিল। কানে হেডফোন থাকায় ট্রেন আসার আওয়াজ পাননি মিঠুন। লাইনের আশপাশে দাঁড়িয়ে থাকা লোকজন চিৎকার করলেও তা কানে ঢোকেনি। হেডফোনে গান শুনতেই মগ্ন ছিলেন তিনি। এর পরেই ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা লাগে মিঠুনের। ধাক্কার অভিঘাতে পাশের একটি লোহার স্তম্ভের উপর ছিটকে পড়েন মিঠুন। রক্তাক্ত অবস্থায় ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মিঠুনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। প্রত্যক্ষদর্শী অনিমেষ মণ্ডল বলেন, ‘‘দু’পারে উপস্থিত অনেক মানুষ চিৎকার করেছিল। অন্যরাও অনেক ডাকাডাকি করে। কিন্তু মিঠুনের কানে হেডফোন ছিল। তাই শুনতে না পেয়ে দুর্ঘটনা ঘটে গেল। চোখের সামনে ছিটকে পড়তে দেখলাম।”
মোবাইল ব্যবহার করতে গিয়ে ইদানীং ট্রেনের ধাক্কায় বহু মানুষের প্রাণ গিয়েছে। কখনও কথা বলতে বলতে আবার কখনও হেডফোন লাগিয়ে ট্রেনের আওয়াজ শুনতে না পেয়ে— এমন ঘটনা সমানে ঘটেই চলেছে। রেল কিংবা প্রশাসনের তরফ থেকে বার বার সাধারণ মানুষকে সতর্কও করা হয়। কিন্তু কাজের কাজ যে কিছুই হচ্ছে না, তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল মুর্শিদাবাদের সুতির ঘটনা। মানুষের হুঁশ ফিরবে কবে?