প্রতিবাদীর মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষোভে স্থানীয়রা। — নিজস্ব চিত্র।
মত্ত অবস্থায় চার যুবকের বিরুদ্ধে পুজোমণ্ডপের সামনে এক মহিলাকে কটূক্তি করার অভিযোগ। প্রতিবাদ করায় দুষ্কৃতীদের মারে প্রাণ দিতে হয় হরিণঘাটার এক যুবককে। তার প্রতিবাদে শনিবার রাতভর নদিয়ার হরিণঘাটা থানার বিরহী এলাকায় মৃত যুবকের দেহ নিয়ে চলল বিক্ষোভ। স্থানীয়দের বিক্ষোভ-অবরোধে দীর্ঘ ক্ষণ অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে ৩৪ নম্বর (অধুনা ১২ নম্বর জাতীয় সড়ক) জাতীয় সড়ক। বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের মূল সড়ক যোগাযোগ। খবর পেয়ে অকুস্থলে পৌঁছয় হরিণঘাটা থানার পুলিশ।
নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে পুলিশের তদন্তকারী আধিকারিকদের ঘিরে রেখে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন স্থানীয় বাসিন্দারা। স্থানীয় সূত্রে খবর, নদিয়ায় হরিণঘাটা থানার বিরহীর বাসিন্দা বছর ২৪-এর শুভ দাস, পুজোর মধ্যে এক দিন বাড়ির কাছের পুজোমণ্ডপে বসেছিলেন। তিনি দেখতে পান, কয়েক জন মত্ত যুবক এক মহিলাকে উত্ত্যক্ত করছেন। শুভ তাঁদের বাধা দেন। ইভটিজ়ারদের সঙ্গে বচসা শুরু হয় শুভর। কিছু ক্ষণ পর অবশ্য এলাকা ছেড়ে চলে যান যুবকের দল। অভিযোগ, পরে শুভ যখন বাইক চালিয়ে অন্যত্র যাচ্ছিলেন, তখন দুষ্কৃতীরা পিছন থেকে ধাওয়া করে বাইকে লাথি মেরে তাঁকে রাস্তায় ফেলে দেন। স্থানীয় বাসিন্দারা রক্তাক্ত অবস্থায় শুভকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে স্থানান্তরিত করানো হয় কলকাতার হাসপাতালে। তার পর থেকে কলকাতায় চিকিৎসাধীন ছিলেন শুভ। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। গত শুক্রবার শুভর মৃত্যু হয়। এর পরেই ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। শনিবার দেহ এলাকায় ফিরলে তা নিয়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে চলতে থাকে বিক্ষোভ।
বিক্ষোভকারীদের অন্যতম দীপ সাহা বলেন, ‘‘ইভটিজ়িংয়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে এক জনকে খুন হতে হল, অথচ পুলিশ নির্বিকার! দেশে আইনশৃঙ্খলার যদি এই অবস্থা হয় তা হলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়? দোষীদের গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি দিতে হবে।’’ রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপার সানি রাজ বলেন, ‘‘অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’