কোলাঘাট থানার প্রয়াগ গ্রামে একটি দোকান থেকে প্রায় সাত কুইন্টাল নিষিদ্ধ বাজি বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। — নিজস্ব চিত্র।
এগরা থেকে দত্তপুকুর— সাম্প্রতিক অতীতে অবৈধ বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে প্রাণ গিয়েছে বহু মানুষের। কিন্তু তার পরেও হুঁশ ফেরেনি পূর্ব মেদিনীপুর জেলা জুড়ে ছড়িয়ে থাকা অবৈধ বাজি কারবারিদের। চোরা পথে বছর ভর বাজির মশলা জেলায় ঢুকলেও কারবারিদের নাগাল পায়নি পুলিশ। আর তারই জেরে রমরমা কারবার চালিয়ে যাচ্ছেন ওই অবৈধ বাজি কারবারিরা। যার প্রমাণ মিলল সাম্প্রতিক একের পর এক পুলিশি অভিযানের মধ্যে দিয়ে।
গত কয়েক দিন ধরে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করেছে বলে দাবি করা হচ্ছে। উদ্ধার হওয়া বাজির বাজারদর লক্ষাধিক টাকা বলে জেলা পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন গ্রেফতারও হয়েছেন। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, গত কয়েক দিন ধরেই অবৈধ বাজির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়েছে।
শনিবার তমলুক মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সাকিব আহমেদের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে কোলাঘাট থানার প্রয়াগ গ্রামে একটি দোকান থেকে প্রায় ৭ কুইন্টাল নিষিদ্ধ শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। একই ভাবে, কাঁথি মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সোমনাথ সাহার নেতৃত্বে খেজুরি থানার বাঁশগোড়া বাজারে অভিযান চালিয়ে দু’টি দোকান থেকে প্রায় সাড়ে ৭ কুইন্টাল নিষিদ্ধ শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নন্দকুমার থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক সৌরভ চিন্নার নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে নন্দকুমার থানার খঞ্চি গ্রামে একটি বাড়ি থেকে প্রায় ২০ কুইন্টাল নিষিদ্ধ বাজি বাজেয়াপ্ত করা হয়। গ্রেফতার করা হয় ওই মজুতকারীকে। তার আগে কোলাঘাট থানার আন্দুলিয়া গ্রামে একটি বাড়ি থেকে প্রায় ১৬ কুইন্টাল নিষিদ্ধ বাজি বাজেয়াপ্ত করা হয়। এখানেও এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয় বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
আলোর উৎসব দীপাবলি আসছে। তার আগে নিষিদ্ধ শব্দবাজি ধরতে পুলিশের লাগাতার অভিযান সাধুবাদ যোগ্য। যদিও প্রশাসনের অন্দরের একটি অংশ দাবি করছে, প্রশাসনেরই কিছু অংশের মদতে অবৈধ বাজির কারবারের এত রমরমা। গত ১৬ মে এগরার খাদিকুল গ্রামে ভানু বাগের বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে ভানু-সহ ন’জনের মৃত্যু হয়। অগাস্টে উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরে বাজি কারখানায় একই ভাবে বিস্ফোরণে বহু মানুষের মৃত্যু হয়। সেই ঘটনার পরেও মদত বন্ধ হয়নি বলেই দাবি প্রশাসনের একটি অংশের। আর তার জেরেই এত বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ শব্দবাজি উদ্ধার হচ্ছে জেলা থেকে।