সীমান্তে হানা নদীর। ছবি: মৃন্ময় সরকার
তারকাঁটা দিয়ে সব সীমান্ত কি বাঁধা যায়! প্রশ্নটা তুলে দিয়ে ফুঁসছে পদ্মা।
রবিবার রাতেও নদী ছিল বিএসএফ ক্যাম্পের মিটার দশেক দূরে। এক রাত্তিরে তা ছুঁয়ে ফেলেছে বাংলাদেশ সীমান্তের কাঁটাতার। বিএসএফ ক্যাম্পে ঘোলা জলের ছিটে লাগছে, জিনিসপত্র গোটাতে শুরু করেছেন জওয়ানেরা। তার পরেই বর্ডার রোডের বাঁধুনি। স্থানীয় ক্যাম্পের কমান্ডান্ট বলছেন, ‘‘ওই রাস্তাটা ফেললেই আর কিছু করার নেই। হুহু করে জল ঢুকবে আঠারোশিয়া গ্রামে।
লালগোলার এই প্রান্তিক গ্রাম পদ্মার এমন আক্রোশ দেখেনি আগে। গ্রামের লাগোয়া সীমান্তরক্ষীদের ক্যাম্পের বয়সও বেশ। পদ্মার এমন আগ্রাসী ভঙ্গিতে এগিয়ে আসা তাঁরা কেউই দেখেননি। সীমান্তের ওই বর্ডার রোডের কয়েক মিটারের মধ্যেই একের পর এক গ্রাম। রাস্তা ভেঙে গেলে নদী যে হুহু করে সেই সব গ্রাম গ্রাস করবে বলাই বাহুল্য। তবে এই অবস্থাতেও সেচ দফতরের কর্তা তো দূর, পঞ্চায়েতের লোকজনেরও দেখা নেই। বিএসএফে’র দাবি, নীরব দর্শকের ভূমিকা নিয়েছেন ডিজ়াস্টার ম্যানেজমেন্টের কর্মীরাও। পদ্মাপাড় পাথর দিয়ে বাঁধানো দূর-অস্ত, এখনও তাদের তরফে একটা বালির বস্তাও পড়েনি। লালগোলা ব্লকের বিলবোরাকোপরা, লালগোলা ও কালমেঘা তিনটি পঞ্চায়েতে ভাঙন রোধের জন্য পদ্মার পাড়ে বাঁশের খাঁচা তৈরি করে তার মধ্যে ইট ও মাটি ভর্তি বস্তা দিয়ে পদ্মাপাড়ে ফেলা হয়েছিল। নদী তা ধুয়ে নিয়ে ফিরে গিয়েছে। আঠরোশিয়া বিএসএফ ক্যাম্পের এক আধিকারিক বলছেন, ‘‘যাদের কাজ করার কথা তারাই পালিয়েছে। আমরা কি নদীর সঙ্গে অস্ত্র নিয়ে লড়ব!’’
সোমবার, মুর্শিদাবাদ জেলা অ্যান্টি ইরোশন ডিভিশন (১) অ্যাসিসট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার বলেন, ‘‘আমরা ইতিমধ্যেই বাঁশের খাঁচা ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা করছি, মঙ্গলবার থেকে বালির বস্তা ফেলার কাজও শুরু হয়ে যাবে। এ ছাড়াও সীমান্তের কাঁটাতার বরাবর যে ভাঙন শুরু হয়েছে তার মধ্যে যে এক কিমি এলাকা ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে রয়েছে। তার জন্য জেলায় একটা পরিকল্পনাও পাঠিয়েছি। টাকা মিললে কাজও শুরু হবে।’’ কিন্তু পঞ্চায়েতের দাবি, এ সবই ভবিষ্যতের কথা, তত দিনে নদী গ্রাস করে না নেয়’!