তৃণমূল সভাপতি খলিলুর রহমান। —ফাইল চিত্র।
পুরসভায় তৃণমূল পুরপ্রতিনিধিদের বিদ্রোহ ঠেকাতে রবিবার দিনভর বৈঠক চলল জঙ্গিপুরে। জঙ্গিপুরে নিজের বাড়িতে দুই পক্ষের পুরপ্রতিনিধিদের নিয়ে জঙ্গিপুর জেলার তৃণমূল সভাপতি খলিলুর রহমানের ডাকা এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলের জেলার চেয়ারম্যান কানাইচন্দ্র মণ্ডলও। ছিলেন জঙ্গিপুরের পুরপ্রধান মফিজুল ইসলাম ও উপ পুরপ্রধান সন্তোষ চৌধুরীও।
২১ সদস্যের জঙ্গিপুর পুরসভায় ১৫ জন দলীয় পুরপ্রতিনিধি নির্বাচিত হলেও পরে তাঁদের সঙ্গে তৃণমূলে যোগ দেন কংগ্রেস পুরপ্রতিনিধি অঞ্জলি সরকারও। অঞ্জলি প্রাক্তন পুরপ্রতিনিধি শত্রুঘ্ন সরকারের স্ত্রী। ফলে ১৬ জনের সমর্থনে চলছে তৃণমূল পুরবোর্ড।
বেশ কিছু দিন থেকেই মূলত ১৫ জন দলীয় পুরপ্রতিনিধিদের মধ্যে চরম গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে। উপ-পুরপ্রধান সহ ১৪ জন দলীয় পুরপ্রতিনিধি দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে লিখিত ভাবে অভিযোগ জানিয়েছেন দলেরই পুরপ্রধান মফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে। সংবাদপত্রে তা ফাঁস হতেই তৃণমূলের মধ্যে শোরগোল পড়ে যায়। পরদিনই পাল্টা সাংবাদিক বৈঠক ডেকে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বিরোধী পুরপ্রতিনিধির সঙ্গে হাত মিলিয়ে দলেরই একাংশ পুরপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগ তোলেন পুরপ্রধান মফিজুল। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে বিরোধী পুরপ্রতিনিধিদের সমর্থনে পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে যে কোনও সময় অনাস্থা আনতে পারেন দলের কয়েক জন পুরপ্রতিনিধি। এই রাজনৈতিক পরিস্থিতি সামলাতেই রবিবার নিজের জঙ্গিপুরের মঙ্গলজনের বাড়িতে দুই পক্ষের কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক ডাকেন সভাপতি খলিলুর রহমান।
দুই পক্ষই এ দিন বিভিন্ন ঘটনার উল্লেখ করে তাদের অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ জানাতে থাকেন। দাবি, পুর পরিষেবা, রাস্তাঘাট বেহাল হয়ে পড়েছে। টেন্ডার নিয়েও কিছু ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ তোলা হয়। এরপরই মধ্যাহ্নভোজ সেরে ফের বৈঠকে বসেন তাঁরা। সব কথা শোনার পর দুই পক্ষকেই সংযত হতে পরামর্শ দেন খলিলুর। ঠিক হয় পুরসভা পরিচালনায় একটি দলীয় কমিটি গড়ার। যেহেতু সোমবার হজ করতে চলে যাবেন খলিলুর, তাই পরে বৈঠক ডেকে দলীয় কমিটি গড়ার সিদ্ধান্ত হয়। এ দিনের বৈঠকে দু’জন ছাড়া দলের সব পুর কাউন্সিলরই উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে খলিলুর বলেন, ‘‘কিছু অসন্তুষ্টি ছিল কয়েক জন দলীয় পুরপ্রতিনিধির মধ্যে। ঠিক হয়েছে সুষ্ঠু ভাবে পুরসভা পরিচালনার জন্য দলীয় পর্যায়ে একটি কমিটি গঠিত হবে। পুরপ্রধানকেও বলা হয়েছে সকলকে নিয়ে পুরসভা চালাতে।”