প্রতীকী ছবি
মঙ্গলবার রাতে বোমাবাজির ঘটনা ঘটল শন্তিপুর শহরে। আহত হলেন এক মহিলা। শহরের বাসিন্দাদের অভিযোগ, বেশ কিছুদিন ধরেই শাসকদলের অভ্যন্তরীণ সমস্যায় বারবার অশান্ত হয়েছে শান্তিপুর। পুরভোটকে সামনে রেখে দলের অভ্যন্তরে ক্ষমতা দখলের রাজনীতি চরমে উঠেছে বলে অভিযোগ। এ দিনের ঘটনা তারই ফলশ্রুতি বলে মনে করা হচ্ছে।
মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর পুরবোর্ড ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আগামী দিনে পুরবোর্ড কারা দখল করবে তা নিয়ে এখন থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে দলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে লড়াই। বিশেষ করে শান্তিপুর কলেজের প্রাক্তন জিএস মনোজ সরকার আদালতের নির্দেশে বিশেষ কিছু শর্তের ভিত্তিতে শহরে ঢোকার পর থেকে সেই লড়াই আরও জোরদার হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ।
তিনি শহরে ঢোকার পর নিজের প্রভাব নতুন করে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা শুরু করে দিয়েছেন। অভিযোগ, তাতে আঁতে ঘা লাগতে শুরু করেছে বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্যের অনুগামীদের। এই জন্যই শহরে নতুন করে অশান্তি শুরু হয়েছে বলে শহরবাসীর একাংশের অভিযোগ। অথচ, প্রথম দিকে প্রাক্তন বিধায়ক অজয় দে-র সঙ্গ ছেড়ে পঞ্চায়েত ভোটের সময় অরিন্দমের হয়েই মনোজ কাজ করতেন বলে খবর। সেই সময় এক বিজেপি কর্মীকে খুন ও বিজেপি-সমর্থক এক মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। পুলিশ তাঁকে গ্রেফতারও করে। ৮৪ দিন জেলে থাকার পর তিনি জামিনে মুক্তি পেলেও আদালতের নির্দেশে শান্তিপুরে ঢুকতে পারছিলেন না। শেষ পর্যন্ত গত বছর অগস্ট মাসে শর্তসাপেক্ষে আদালত তাঁকে শান্তিপুরে ঢোকার অনুমতি দেয়।
শহরে ঢুকেই মনোজ নতুন করে নিজের পায়ের তলার মাটি শক্ত করতে থাকেন। আর এতেই অরিন্দম-ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে তাঁর বিবাদ শুরু হয় বলে অভিযোগ। মনোজ ঘনিষ্টদের একাংশের দাবি, তিনি বিশ্বাস করেন যে, বিধায়কের চক্রান্তেই তাঁকে এতদিন জেল খাটকে হয়েছে। তাঁর সঙ্গে এখন অজয় দে-র সম্পর্ক অত্যন্ত ভাল হয়েছে। ৫ নম্বর ওয়ার্ডে মনোজ নিজে প্রার্থী হবেন বলেও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এতেই মনোজের বাড়ির এলাকা দেশবন্ধু কলোনি, নীচেরপাড়া-সহ একাধিক জায়গায় অরিন্দমের সঙ্গে তাঁর লড়াই চরমে উঠেছে বলে অভিযোগ। মাঝে মধ্যেই বোমার শব্দে কেঁপে উঠছে এই সব এলাকা। মঙ্গলবার রাতেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়েছে। এ দিন বোমার আঘাতে আহত মহিলার পরিবার আবার মনোজদের পরিবারের ঘনিষ্ঠ। মনোজের দাবি, ‘‘এলাকা দখল করতেই বিধায়ক তাঁর লোকজন দিয়ে এ সব করছেন। নতুন করে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করতে চাইছেন। পুরভোটে শান্তিপুরের মানুষ এর উত্তর দেবেন।’’ আর তৃণমূল বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘এমন কোনও বোমাবাজির ঘটনার কথা আমার জানা নেই।’’ যদিও অরিন্দম-ঘনিষ্ঠদের দাবি, মনোজই বোমাবাজি করে তাঁদের নামে দোষারোপ করছেন। আর অজয় দে বলছেন, ‘‘যাঁরা শহরকে অশান্ত করার চেষ্টা করুবেন পুলিশকে বলব তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করতে।’’