জীবনকৃষ্ণের পুকুর ‘শুদ্ধ’ করতে গিয়ে এফআইআর বিজেপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। — নিজস্ব চিত্র।
মুর্শিদাবাদের বড়ঞায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের উপস্থিতিতে সিবিআইয়ের হাতে ধৃত তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার পুকুর-অভিযানে বিশৃঙ্খলা ও আইনভঙ্গের জেরে বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণের পুকুরে যাওয়ার চেষ্টা করেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার-সহ জেলা বিজেপির নেতারা। বাধা দেয় পুলিশ। দফায় দফায় পুলিশের সাথে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন বিজেপি নেতারা। বৃহস্পতিবারের ঘটনায় দায়ের হয়েছে এফআইআর।
বড়ঞা থানায় দায়ের হওয়া এফআইআরে নাম রয়েছে বিজেপির মুর্শিদাবাদ দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শাখারভ সরকার-সহ স্থানীয় বিজেপি নেতাদের। ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় দায়ের হয়েছে মামলা। সরকারি কর্মচারীকে কাজে বাধা দেওয়া, নারীর মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করার উদ্দেশ্যে আক্রমণেরও অভিযোগ রয়েছে। ইতিমধ্যেই এফআইআর ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। পুকুর অভিযানে ব্যর্থ হয়ে বৃহস্পতিবার বড়ঞা থানার বাইরে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি।
সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদের সময় বাড়ির পাশের এঁদো পুকুরে মোবাইল ছুড়ে ফেলেছিলেন জীবনকৃষ্ণ। তার পর আড়াই দিন ধরে সেই পুকুরের সমস্ত জল বার করে চলে কাদা ঘাঁটা। উদ্ধার হয় দু’টি মোবাইল ফোন। বৃহস্পতিবার সেই পুকুরকে ‘শুদ্ধ’ করতে গিয়েই দফায় দফায় পুলিশি বাধার মুখে পড়তে হয় বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্তকে। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন বিজেপি নেতা-কর্মীরা। পুকুর অবধি পৌঁছতে পারেনি বিজেপি। তার উপর এফআইআর দায়ের হওয়ায় ক্ষোভ বেড়েছে পদ্মশিবিরে। বিজেপির জেলা সভাপতি শাখারভ সরকার বলেন, ‘‘পুলিশ দলদাস থেকে তৃণমূলের ক্যাডারে পরিণত হয়েছে। একটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে এ ধরনের আচরণ ও মামলা দায়ের নজিরবিহীনই শুধু নয়, ন্যাক্কারজনকও বটে।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি শাওনি সিংহ রায় পাল্টা বলেন, ‘‘আইন কী ভাবে চলবে সেটা বিজেপি ঠিক করে দেবে নাকি! বেআইনি ভাবে কোনও জায়গায় কিছু হয়ে থাকলে পুলিশ তো পদক্ষেপ করবেই।’’
মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার সুরিন্দর সিংহ জানিয়েছেন, যেখানে সভা করা হবে বলে অনুমতি নেওয়া হয়েছিল, সেখানে সভা হয়নি। অন্য একটি জায়গায় সভা করার পরিকল্পনা চলছিল। রাস্তায় ব্যারিকেড করে তাঁদের আটকানোর চেষ্টা করা হয়। তখন ওই রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া নেতা-কর্মীরা পুলিশের উপর আক্রমণ চালান। মহিলা পুলিশের উপরেও হামলা হয়। এতে বেশ কয়েক জন পুলিশকর্মী আহত হন। কর্মসূচিতে উপস্থিত এক নেতা আলাদা নিরাপত্তা পেয়ে থাকেন। তাই আগাম অনুমতি ছাড়া, বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা না করে সভার অনুমতি দেওয়া যায় না। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে বলেও জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।