সত্তরের দশক থেকে বলিউডের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তিনি। একের পর এক ছবি পরিচালনা করেছেন। প্রযোজনার পাশাপাশি চিত্রনাট্যও লিখেছেন বেশ কিছু ছবির। কিন্তু কোনও ছবিই ১০০ কোটির ক্লাবে নাম লেখাতে পারেনি। তবুও বলিপাড়ার খ্যাতনামী এবং বৈগ্রহিক পরিচালকদের তালিকায় নাম রয়েছে তাঁর।
২৬ বছর বয়সে পরিচালনার জগতে পা রাখেন মহেশ ভট্ট। ‘মঞ্জিলে অউর ভি হ্যায়’, ‘অর্থ’, ‘সারাংশ’, ‘লহু কে দো রং’, ‘নাম’, ‘আজ’, ‘কাশ’, ‘ঠিকানা’, ‘ড্যাডি’র মতো একাধিক ছবি পরিচালনা করেছেন তিনি।
১৯৯০ সালে ‘আশিকি’ নামের রোম্যান্টিক ঘরানার একটি ছবি পরিচালনা করে রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন মহেশ। তার পর ‘দিল হ্যায় কে মানতা নেহি’, ‘সড়ক’, ‘হম হ্যায় রাহি প্যার কে’র মতো ছবিও পরিচালনা করেন তিনি।
নব্বইয়ের দশকে মহেশ তাঁর পরিচালিত দু’টি ছবিতে শাহরুখ খানের সঙ্গে কাজ করেন। দু’টি ছবিতেই শাহরুখ ছিলেন মুখ্যচরিত্রে। কিন্তু বলিউডের ‘বাদশা’ থাকা সত্ত্বেও ছবি দু’টি বক্স অফিসে ব্যবসা করতে পারেনি।
১৯৯৬ সালে মহেশের পরিচালনায় প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘চাহত’। শাহরুখের বিপরীতে এই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন মহেশের কন্যা পূজা ভট্ট। সঙ্গে ছিলেন নাসিরুদ্দিন শাহ। রোম্যান্টিক থ্রিলার ঘরানার এই ছবি বক্স অফিসে লক্ষ্মীলাভ করেনি।
তার পর দু’বছরের বিরতি। ওই দু’বছরে ‘দস্তক’ এবং ‘তমান্না’ নামে দু’টি ছবি তৈরি করেছিলেন মহেশ। সেই ছবি দু’টিও দর্শকমহলে তেমন সাড়া ফেলতে পারেনি।
শাহরুখের সঙ্গে প্রথম ছবি বক্স অফিসে ব্যবসা করতে ব্যর্থ হয়। তার পরেও তাঁর সঙ্গে দ্বিতীয় বার জুটি বাঁধেন মহেশ। ‘দ্য হোল টাউন’স টকিং’ নামের হলিউডি ছবির অনুকরণে ‘ডুপ্লিকেট’ ছবির চিত্রনাট্য নির্মাণ করা হয়। এই ছবির পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন মহেশ।
১৯৯৮ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘ডুপ্লিকেট’। এই ছবিতে শাহরুখকে দ্বৈতচরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায়। শাহরুখের বিপরীতে সে বার আর অভিনয় করেননি মহেশ-কন্যা। বরং তাঁর পরিবর্তে দেখা যায় অন্য নায়িকাদের।
‘ডুপ্লিকেট’ ছবিতে শাহরুখের বিপরীতে অভিনয় করতে দেখা যায় জুহি চাওলা এবং সোনালি বেন্দ্রেকে। এই ছবিটিও বক্স অফিসে ভাল উপার্জন করতে পারেনি।
‘রেডিয়ো নশা’কে দেওয়া এক পুরনো সাক্ষাৎকারে মহেশ বলেছিলেন, ‘‘আমিই একমাত্র মানুষ যিনি শাহরুখ খানের সঙ্গে দু’টি ছবি বানিয়েছেন এবং দু’টি ছবিই ফ্লপ করেছে।’’
শাহরুখের ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন মহেশ। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘‘শাহরুখ অনেক বড় মনের মানুষ। ইন্ডাস্ট্রিতে আমাদের দেওয়া-নেওয়ার সম্পর্ক। এক জন পরিচালক যখন এক জন তারকার সঙ্গে ছবি করেন এবং সেটি ব্যর্থ হয় তখন তারকার আচরণেও পরিবর্তন আসে।’’ কিন্তু শাহরুখ কখনও তাঁর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেননি বলে জানিয়েছিলেন মহেশ।
১৯৯৯ সালে ‘কার্তুজ়’ নামের একটি ছবি পরিচালনা করেন মহেশ। সেটাই ছিল তাঁর পরিচালিত শেষ ছবি। তার পর অধিকাংশ হিন্দি ছবি প্রযোজনা করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।
২০২৩ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘১৯২০: হরর্স অফ দ্য হার্ট’। এই ছবির চিত্রনাট্য নির্মাণ করেছিলেন মহেশ।