বিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ডাকছে বিপত্তি

একেই পুজোর বাজারে এ বার চরম মন্দা। তার উপর যখন-তখন দীর্ঘ সময়ের জন্য বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় নাজেহাল দেবেশ বাধ্য হয়ে বিদ্যুৎ দফতরে ফোন করেও কোনও সদুত্তর পাননি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নবদ্বীপ শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:১১
Share:

প্রতীকী ছবি।

পুজোর আগে রবিবারের সন্ধে। খরিদ্দারহীন দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছিলেন নবদ্বীপ বাসনপট্টির ব্যবসায়ী দেবেশ গোস্বামী। সকাল থেকে দফায় দফায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জেরে গোটা দিনের কেনাবেচা কার্যত স্তব্ধ।

Advertisement

একেই পুজোর বাজারে এ বার চরম মন্দা। তার উপর যখন-তখন দীর্ঘ সময়ের জন্য বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় নাজেহাল দেবেশ বাধ্য হয়ে বিদ্যুৎ দফতরে ফোন করেও কোনও সদুত্তর পাননি। ক্ষুব্ধ স্বরে তিনি বলেন, “কেন এ ভাবে দিনের পর দিন দীর্ঘ সময়ের জন্য বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে তার কোনও ব্যাখ্যা নেই। এমনকী, বিষয়টি ব্যবসায়ীদের ঠিক ভাবে জানানোর ভদ্রতাটুকু ওঁরা দেখান না। কিছু জানতে চাইলেই দায়সারা জবাব। শুধু বিলের বেলায় রক্ষা নেই।”

এই ক্ষোভ নবদ্বীপে সর্ব স্তরের ব্যবসায়ী মহলের। বেশ কয়েক মাস ধরে নবদ্বীপ শহর জুড়ে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ থেকে ব্যবসায়ী। আইসক্রিম কল, গ্রিল কারখানা, আটাকল থেকে মিষ্টির দোকান, হোটেল রেস্তরাঁ, ছোট ছোট হস্তশিল্প কারখানার বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে নাভিশ্বাস উঠছে। পুজোর মুখে এই বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণ জানতে শুক্রবার স্থানীয় বিদ্যুৎ দফতরে দল বেঁধে হাজির হয়েছিল নবদ্বীপের ব্যবসায়ী মহল। একগুচ্ছ অভিযোগ জমা হয় রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টনকারী সংস্থার অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার তথা নবদ্বীপের স্টেশন ম্যানেজার অমিত বসাকের কাছে।

Advertisement

এই প্রসঙ্গে নবদ্বীপ ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক নিরঞ্জন দাস বলেন, “দিনের পর দিন বিদ্যুৎ নিয়ে ভুগছেন নবদ্বীপের ব্যবসায়ীরা। ওঁরা বলছেন পুজোর আগে লাইনে কাজ হচ্ছে। তা হোক, কিন্তু কবে কখন কোথায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে, তা মানুষকে জানানোর দায়িত্ব কার? পুজোর আগে সন্ধ্যায় দীর্ঘ ক্ষণ ধরে বিদ্যুৎ বন্ধ করে সংস্কার কাজের অর্থ কী?”

ফলে, মন্দা বাজারে প্রবল গরমে মানুষকে যে হাওয়া খাইয়ে স্বস্তি দেবেন বিক্রেতা, সে সুযোগটুকুও নেই। ব্যবসায়ী সমিতির তরফ থেকে আরও অভিযোগ করা হয়েছে যে, দীর্ঘ দিন ৪৪০ লাইন ছেড়ে দেওয়ার পরেও ‘কশান মানি’ ফেরত দেওয়া হচ্ছে না। বহু ব্যবসায়ীর মোটা টাকা আটকে আছে। একেবারে তিন মাসের নয়, বিল জমা নিতে হবে এক মাস করে—এই দাবিও তোলেন ব্যবসায়ীরা।

বিদ্যুৎ দফতরের ঢিলেঢালা মনোভাবে ক্ষুব্ধ শহরের মানুষ। নবদ্বীপ নাগরিক কমিটির সম্পাদক দিলীপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “গোটা শহর জুড়ে দীর্ঘ দিন ধরে বিদ্যুৎ বিভ্রাট চলছে। শিশু, অসুস্থ, বৃদ্ধ মানুষেরা গরমে চরম বিপন্ন হয়ে পড়ছেন।”

নবদ্বীপের স্টেশন ম্যানেজার অমিত বসাক বলেন, “এই বিষয়ে কোনও কথা বলার এক্তিয়ার আমার নেই। যা বলার বলবেন

রিজিওনাল ম্যানেজার।”

নদিয়ার রিজিওনাল ম্যানেজার রমেশচন্দ্র মণ্ডল বলেন, “নবদ্বীপের ওভারহেড তার মাটির নীচ দিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ শেষের মুখে। পুজোর আগে কাজ শেষ করা হবে। শহরের বিভিন্ন অঞ্চল জুড়ে কাজ দ্রুত গতিতে হচ্ছে বলে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে মানুষের। খুব দ্রুত এই পর্ব মিটে যাবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement