মুকুল রায়। ফাইল ছবি।
প্রত্যাশিত ভাবেই পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (পিএসি) সদস্য পদে মনোনয়ন জমা দিলেন বিজেপি-র বিধায়ক এবং অধুনা তৃণমূল নেতা মুকুল রায়। বুধবার বিধানসভায় চিঠি পাঠিয়ে মনোনয়ন দাখিল করেন তিনি। প্রসঙ্গত, আনন্দবাজার অনলাইন প্রথম লিখেছিল, বিধানসভার ওই কমিটির চেয়ারম্যান পদটি পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন মুকুল। শাসক তৃণমূল শিবিরের তেমনই পরিকল্পনা ছিল। সে কারণেই মুকুল তাঁর বিধায়কের পদ থেকে ইস্তফাও দেননি। এখন দেখার, মুকুলের সদস্যপদে মনোনয়নের চিঠি এবং বিজেপি-র তাঁর বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইনের প্রয়োগ সম্পর্কে সক্রিয়তা রাজ্যের পরিষদীয় রাজনীতিকে কোন মোড়ে নিয়ে গিয়ে দাঁড় করায়।
সদ্যসমাপ্ত বিধানসভা ভোটে কৃষ্ণনগর উত্তর আসন থেকে বিজেপি-র হয়ে ৩৫ হাজারের বেশি ভোটে জিতেছিলেন মুকুল। কিন্তু গত ১১ জুন পুত্র শুভ্রাংশু রায়কে নিয়ে তৃণমূলে ফেরেন তিনি। প্রাক্তন রেলমন্ত্রীই যে পিএসি-র চেয়ারম্যান হতে চলেছেন, তার ইঙ্গিতও মিলেছে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যে। তিনি বলেছেন, ‘‘বিধানসভার রুল মেনেই সিদ্ধান্ত হবে।’’ আর পরিষদীয়মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বিধানসভার যে কোনও কমিটির চেয়ারম্যান মনোনয়নের দায়িত্ব স্পিকারের। এক্ষেত্রে তিনি যা সিদ্ধান্ত নেবেন, তাই চূড়ান্ত।
যদিও বিজেপি পরিষদীয় দল বিষয়টির ওপর নজর রাখছে। আইনে তেমন কিছু না থাকলেও পরিষদীয় রীতি অনুযায়ী পিএসি-র চেয়ারম্যান পদটি প্রধান বিরোধীদল পেয়ে থাকে। তবে সেই রীতি বা রেওয়াজের ব্যতিক্রমও রয়েছে। তবে খাতায়কলমে মুকুল এখনও বিজেপি-রই বিধায়ক। ফলে খাতায়কলমে সেই ‘রীতি’-ও বহালই থাকছে। বিজেপি পরিষদীয় দলও মনে করছে, আইনত মুকুল বিজেপি-র সদস্য দেখিয়েই তাঁকে চেয়ারম্যান পদে মনোনীত দেওয়া হতে পারে। এমন আশঙ্কা থেকেই মুকুলের বিধায়কপদ খারিজের দাবিতে আগেভাগেই স্পিকারকে চিঠি দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বুধবার বিধানসভার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, আগামী ২ জুলাই থেকে শুরু হওয়া বাজেট অধিবেশনেই মুকুলকে পিএসি-র চেয়ারম্যান ঘোষণা করতে পারেন স্পিকার। স্পিকারের সেই ঘোষণার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর লক্ষ্যে নিজেদের তৈরি রাখছে বিজেপি। প্রসঙ্গত, বুধবার দুপুরে বিজেপি তাদের প্রাপ্য যাবতীয় পরিষদীয় কমিটির জন্য দলীয় বিধায়কদের নাম জমা দেবে স্পিকারের দফতরে।