লোকসভার স্পিকারের কাছে ধরাজ্যপালের নামে নালিশ বিমানের।
সাংবিধানিক পদে থেকে প্রশাসনিক ব্যাপারে হস্তক্ষেপের অভিযোগ আগেই উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। তবে এত দিন সেই অভিযোগ এবং পাল্টা অভিযোগ রাজ্যের অন্দরেই সীমাবদ্ধ ছিল। এ বার রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের বিরুদ্ধে সরাসরি লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে অভিযোগ জানালেন রাজ্য বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভার প্রশাসনিক বিষয়ে রাজ্যপাল হস্তক্ষেপ করছেন, রাজ্যের কাজে বাধা দিচ্ছেন বলে অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার সব রাজ্যের বিধানসভার স্পিকারদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন বিড়লা। সেখানেই ধনখড়ের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন বিমান। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার প্রশাসনিক কাজে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করছেন,যা তাঁর এক্তিয়ারের মধ্যেই পড়ে না।’’ শুধু তাই নয়, বিধানসভায় পাশ হয়ে যাওয়া বিল ইচ্ছাকৃত ভাবে রাজ্যপাল ফেরত পাঠাচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন বিমান। তিনি বলেন, ‘‘বিল পাশ করে পাঠানো হলেও, রাজ্যপালের অনুমতি মিলছে না। সই না করেই বিল ফেরত পাঠাচ্ছেন তিনি।’’
কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি হিসেবে বাংলায় নিযুক্তির পর থেকেই রাজ্যের সঙ্গে সঙ্ঘাত চলে আসছে ধনখড়ের। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে, তাঁকে ‘বিজেপি-র এজেন্ট’ বলে প্রকাশ্যে কটাক্ষ করতে শুরু করেন তৃণমূল নেতৃত্ব। এর পর সময় যত এগিয়েছে, ক্রমশই দু’পক্ষের মধ্যে সম্পর্ক তিক্ত হয়েছে। বার বার নেটমাধ্যমে রাজ্যের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়ে এসেছেন রাজ্যপাল। ভোটের আগে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করতেও দেখা যায় তাঁকে। এমনকি সে নিয়ে দিল্লিতে অমিত শাহের সঙ্গে দেখাও করতে যান তিনি। ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ নিয়েও সম্প্রতি ফের দিল্লি গিয়েছিলেন। তার জেরে রাজ্যপাল পদটিই তুলে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেত শুরু করেছেন তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ। এমন পরিস্থিতিতে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে সরাসরি লোকসভার স্পিকারের কাছে অনুযোগ করায় সঙ্ঘাত আরও একধাপ বাড়ল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
তবে শুধু রাজ্যপালের বিরুদ্ধেই নয়, নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও লোকসভার স্পিকারের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন বিমান। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃতীয় বার রাজ্যে তৃণমূল সরকারের শাসন চালু হয়েছে প্রায় ২ মাস হতে চলল। কিন্তু নির্বাচনী উত্তাপ এখনও ঠাহর হচ্ছে রাজ্যে। বিমানও তাঁর বক্তব্যে নির্বাচন কমিশনকে টেনে আনেন। রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করার জন্য কমিশনকে কাঠগড়ায় তোলেন তিনি। বিমানের বক্তব্য, ‘‘করোনায় আক্রান্ত হয়ে একাধিক বিধায়কের মৃত্যু হয়েছে রাজ্যে। কমিশন ৮ দফায় ভোট করানোর জন্যই এমন হয়েছে, যেখানে মুখ্যমন্ত্রী প্রথম থেকেই কম দফায় ভোট করার পক্ষে সওয়াল করে আসছিলেন। কিন্তু তাঁর কথা ধর্তব্যের মধ্যেই আনা হয়নি।’’