West Bengal Lockdown

মুখে মাস্ক, বিধি মেনেই এক হল চার হাত

করোনার এই সঙ্কটকালেই চার হাত এক হল। যাবতীয় করোনা বিধি মেনে, মুখে মাস্ক পরেই হল শুভদৃষ্টি থেকে মালাবদল।     

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২০ ০৫:৩১
Share:

নবদম্পতি: বিয়ের পরে সৌরভ ও স্বাতী। নিজস্ব চিত্র

এ রোগে একলা থাকা দস্তুর। আপনজনেদের স্বার্থেই দূরত্ব বজায় রাখা আবশ্যক।

Advertisement

করোনার এই সঙ্কটকালেই চার হাত এক হল। যাবতীয় করোনা বিধি মেনে, মুখে মাস্ক পরেই হল শুভদৃষ্টি থেকে মালাবদল।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় খড়্গপুর শহরের তালবাগিচার বামনপাড়ায় ছিল এই বিয়ের আয়োজন। পাত্র সৌরভ কর্মকারের বাড়ির মনসা মন্দিরেই হয়েছে অনাড়ম্বর বিয়ে। পাত্রী স্বাতী পাতর ঝাড়গ্রামের মেয়ে। সব মিলিয়ে জনা পনেরো লোক। সকলেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেছিলেন, মুখে ছিল মাস্কও। পাত্র-পাত্রীও একটি বারের জন্য মাস্ক খোলেননি। করোনা-বিধি মেনে সৌরভ-স্বাতীর বিয়েতে কোনও প্রীতিভোজের আয়োজন করা হয়নি। সেই টাকা দিয়ে লকডাউনে বিপাকে পড়া অসহায় মানুষের খাওয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন নবদম্পতি। এলাকার একটি সামাজিক সংগঠনকে সেই লক্ষ্যে অর্থ দান করেছেন।

Advertisement

প্রতিবেশীরা আমন্ত্রিত না হলেও বিয়ের খবর পেয়েছেন। তাঁদের অনেকের প্রশ্ন, ‘আর ক’টা দিন কি দেরি করা যেত না?’ আবার অনেকে বলেছেন, ‘প্রশাসনিক নিয়ম মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বিয়ে হলে ক্ষতি কী!’ পাত্র সৌরভের কথায়, “প্রশাসনিক অনুমতির বিষয়টি জানা নেই। তবে আমরা করোনা সতর্কতার সমস্ত নিয়ম মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মুখে মাস্ক পরেই বিয়ে করেছি। ১০-১৫জনের বেশি লোকও ছিল না।” বিষয়টি নিয়ে খড়্গপুরের মহকুমাশাসক বৈভব চৌধুরী বলেন, “বিয়েতে সামাজিক অনুষ্ঠান করে ভিড় করা যাবে না। কেউ যদি বিয়ের জন্য অনুমতি চায় তবে আমরা সব দিক খতিয়ে দেখে ১০-১৫ জনের উপস্থিতিতে বিয়ের অনুমতি দিতে পারি।” অবশ্য এক্ষেত্রে অনুমতি না থাকলেও সল্প সংখ্যক মানুষের উপস্থিতিতে সতর্কতা মেনেই বিয়ে হওয়ায় কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে।

পারিবারিক সূত্রে খবর, তালবাগিচাতেই এক আত্মীয়ের বিয়েতে ঝাড়গ্রামের বড়ধবনী এলাকার তরুণী স্বাতীর সঙ্গে আলাপ হয়েছিল সৌরভের। সাড়ে তিন বছরের প্রেমের সম্পর্কের পরে গত ১৩ মার্চ বছর বাইশের সৌরভের সঙ্গে বছর কুড়ির স্বাতীর বিয়ে ঠিক হয়। কিন্তু সৌরভের মা সরস্বতী কর্মকার অসুস্থ হওয়ায় থমকে গিয়েছিল বিয়ে। তারপরে চৈত্র মাসে বিয়ে হয়নি। শেষমেশ ১৬ এপ্রিল বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক হয়। সৌরভের কথায়, “বাবা ২০১১ সালে মারা গিয়েছিলেন। বাবা বলেছিলেন ঠিক হওয়া দিনেই বাড়ির মন্দিরে বিয়ে করতে। তাই লকডাউনের আগেই বাড়ির মন্দিরে বিয়ে সারতে ঝাড়গ্রাম থেকে স্বাতীকে এনে পিসির বাড়িতে রেখেছিলাম।”

লকডাউন থাকায় বিয়েতে ঝাড়গ্রাম থেকে স্বাতীর পরিবারের কেউ আসতে পারেননি। তবে সব বাধা কাটিয়ে শেষমেশ চারহাত এক হওয়ায় খুশি নবদম্পতি, দুই পরিবারও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement