বহু কচ্ছপের মৃত্যু। প্রতীকী ছবি।
খালের জলে ভাসছে শতাধিক কচ্ছপের মৃতদেহ। বুধবার এমনই দৃশ্য নজরে এসেছে পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি ৩ নম্বর ব্লকের দেবেন্দ্র গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। একটি চাল কল থেকে ছড়ানো দূষিত জলের জেরে কচ্ছপগুলির প্রাণ গিয়েছে বলেই দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। বিষয়টি নজরে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। ঘটনাস্থলে যান কাঁথি থানার পুলিশ, বন দফতর, পশু চিকিৎসক থেকে শুরু করে ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকরা। কী কারণে এতগুলি কচ্ছপের মৃত্যু হয়েছে তা তদন্ত করে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা।
সূত্রের খবর, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথি ৩ নম্বর ব্লকের দেবেন্দ্র গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ‘সীতা মা’ নামে একটি চাল কল রয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে ওই চাল কলের জল নালার সাহায্যে খালের জলে মেশে বলে গ্রামবাসীদের অভিযোগ। বুধবার সকালে নজরে আসে শতাধিক কচ্ছপ এবং মাছ মরে ভাসছে ওই খালে। কয়েক কিলোমিটার জুড়ে ধান জমি এবং খালের জলে মৃত কচ্ছপগুলি স্তূপ হয়ে পড়ে রয়েছে। এই দৃশ্য দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন গ্রামবাসীরা।
সুরঞ্জন দাস নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘‘রাইস মিলের গাফিলতি কারণে আমরা জীব বৈচিত্র্য হারাতে বসেছি। বর্জ্য পদার্থ কোনও রকম পরিশোধন না করেই খালে জলে ছেড়ে দেন রাইস মিল কর্তৃপক্ষ। পরিবেশকে আমাদের বাঁচাতে হবে। পরিবেশ নষ্ট হলে আমরা কেউ সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকতে পারব না। রাইস মিল অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।’’
কাঁথি ৩ নম্বর ব্লকের বিডিও নেহাল আহমেদ বলেন, “আমি দুপুর নাগাদ খবর পেয়েছি। এর পর স্থানীয় পুলিশ থেকে পঞ্চায়েতের আধিকারিক, পশু চিকিৎসক এবং বন দফতরের আধিকারিকদের ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণ করে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, প্রায় ১০০ থেকে ১৫০টি কচ্ছপের মৃত্যু হয়েছে। তবে সে ভাবে কোনও মাছের মৃত্যু হয়নি।’’ তিনি আরও বলেন, “ঠিক কোন কারণে এত গুলি কচ্ছপের মৃত্যু হয়েছে তা জানতে সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এর পর আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
যদিও রাইস মিলের ম্যানেজার দীপক পণ্ডা বলেন, ‘‘কচ্ছপ মারা গেছে না কি জানি না। আপনাদের কাছ থেকে শুনলাম৷ এখানকার জল না কি অন্য কোনও জায়গার জলের কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে তা খতিয়ে দেখতে হবে।’’