প্রতীকী ছবি
সামনে পুরভোট। পুরভোটের মুখেই মেদিনীপুরের জন্য বিপুল বাড়ি বরাদ্দ হয়েছে। সকলের জন্য বাড়ি (হাউস ফর অল) প্রকল্পের আওতায় এই বরাদ্দ। প্রশাসন সূত্রে খবর, এই প্রকল্প শুরু হয়েছে ২০১৫- ’১৬ সাল থেকে। এ বার একলপ্তে যে সংখ্যক বাড়ি বরাদ্দ হয়েছে তা আগে কখনও হয়নি। বরাদ্দকৃত বাড়ির সংখ্যা ২,৫০০! ইতিমধ্যে উপভোক্তা চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে। গৃহহীনদের নামের তালিকা আগে থেকেই পুরসভায় রয়েছে। সেই তালিকা খতিয়ে দেখেই উপভোক্তা চিহ্ণিত করা হচ্ছে।
পুরভোটের মুখেই বিপুল বাড়ির বরাদ্দ আসায় কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিরোধীরা। প্রাক্তন সিপিএম কাউন্সিলর জয়ন্ত মজুমদারের কথায়, ‘‘আমার মনে হচ্ছে পুরসভা ভোটের আগে গরিব মানুষের মন জয় করতেই এত সংখ্যক বাড়ি বরাদ্দ করা হয়েছে।’’ জয়ন্তর সংযোজন, ‘‘প্রকৃত গরিব মানুষেরা যাতে সরকারি প্রকল্পের বাড়ি পান, আমরা তা নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি।’’ প্রাক্তন কংগ্রেস কাউন্সিলর সৌমেন খানের কথায়, ‘‘পুরসভা ভোটের আগে এ সব চমক। হঠাৎ করে পুরসভা ভোটের মুখেই এত বাড়ি বরাদ্দ করা হল। মানুষ বোকা নন। সব বুঝতে পারছেন।’’ তৃণমূল অবশ্য বিরোধীদের কটাক্ষ গায়ে মাখছে না। প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর তথা শহর তৃণমূলের সভাপতি বিশ্বনাথ পাণ্ডবের কথায়, ‘‘পুরসভা ভোটের সঙ্গে বাড়ি বরাদ্দের কোনও সম্পর্ক নেই। এই প্রকল্পে ধাপে ধাপে বাড়ি বরাদ্দ হয়। এ বার বেশি সংখ্যক বাড়ি বরাদ্দ হয়েছে। তাতে ক্ষতি কী!’’ বিশ্বনাথের আশ্বাস, ‘‘বাড়ি প্রকৃত গরিবরাই পাবেন।’’
পুরসভা সূত্রে খবর, ২০১৫ সালে পুর- উদ্যোগে মেদিনীপুরে আর্থ- সামাজিক সমীক্ষা হয়েছিল। সেই সমীক্ষা অনুসারে শহরে গৃহহীন মানুষের সংখ্যা ছিল প্রায় ৯ হাজার। সেই সময়েই গৃহহীন মানুষদের একটি তালিকা তৈরি করা হয়। ওই তালিকা ধরেই ধাপে ধাপে বাড়ি তৈরি হচ্ছে। উপভোক্তা চিহ্ণিত করার সময়ে অবশ্য এলাকায় গিয়ে তথ্য যাচাই করে নেওয়া হচ্ছে। দেখা হচ্ছে, ওই মানুষেরা সত্যিই গৃহহীন কি না। তাঁদের নিজের নামে জমি রয়েছে কি না প্রভৃতি।
মেদিনীপুরের পুর- প্রশাসক তথা মেদিনীপুরের (সদর) মহকুমাশাসক দীননারায়ণ ঘোষ মানছেন, ‘‘এ বার অনেকগুলি বাড়ি তৈরি হবে। গৃহহীন মানুষদের ওই তালিকা ধরে তথ্য যাচাই করা হচ্ছে। তথ্য যাচাই করেই উপভোক্তা চিহ্ণিত করা হচ্ছে।’’ মুখ্যমন্ত্রী কাটমানি ফেরানোর নিদান দেওয়ার পরে মেদিনীপুরে বিতর্কে এই প্রকল্পের নাম জড়িয়েছিল। কাটমানি ফেরত চেয়ে শহরেও একাধিক কাউন্সিলরকে ঘিরে বিক্ষোভ হয়। তৃণমূলের শহর সভাপতির অবশ্য দাবি, ‘‘বিরোধীদের কাজই কুৎসা- অপপ্রচার করা। বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার জন্য তৃণমূলের কে কাটমানি নেয়নি। নিতে পারেও না।’’