— প্রতীকী চিত্র।
পারিবারিক বিবাদের জেরে স্ত্রী, সন্তান-সহ শ্বশুরবাড়ির একাধিক সদস্যকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠল এক প্রৌঢ়ের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমার থানার নামালখ্যা নাইকুণ্ডি গ্রামে। ঘটনার কথা জানাজানি হতেই গ্রামবাসীরা অভিযুক্তকে ধরে গাছে বেঁধে মারধর করেন। খবর পেয়ে নন্দকুমার থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্তকে জনতার হাত থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশি আহতদের প্রথমে নন্দকুমার এবং পরে সেখান থেকে তাম্রলিপ্ত মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, আহতদের মধ্যে তিন জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মঙ্গলবার দুপুরে ৪৮ বছরের শেখ আবু আচমকাই একটি ধারালো অস্ত্র নিয়ে নিজের দুই ছেলের উপর চড়াও হন। ছেলেদের বাঁচাতে গিয়ে অস্ত্রের ঘায়ে জখম হন স্ত্রী আসমা বিবি। তার পর একে একে শ্বশুর, শ্বাশুড়ি এবং দাদাশ্বশুরকেও কুপিয়ে খুনের চেষ্টা করেন আবু। অভিযোগ এমনই।
স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, দীর্ঘ দিন ধরেই শ্বশুরবাড়িতে ঘরজামাই হয়ে থাকতেন আবু। ওই পরিবারে অশান্তি লেগেই ছিল। মঙ্গলবার হঠাৎ করেই দুই ছেলে, স্ত্রী এবং শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের উপর হামলা চালান তিনি। প্রতিবেশীরা কয়েক জন আবুকে নিরস্ত করেন। পরে তাঁকে একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে মারধর করেন স্থানীয়েরা। গ্রামবাসীদের হাত থেকে অভিযুক্তকে উদ্ধার করে নন্দকুমার হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে তাঁর শারীরিক অবস্থা দেখে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কী নিয়ে এমন ঘটনা ঘটল, তার তদন্ত শুরু হয়েছে।
আবুর স্ত্রী আসমা জানান, ২০০৭ সালে তাঁদের বিয়ে হয়। তাঁর অভিযোগ, ‘‘বিয়ের পর থেকেই আমাকে মারধর করত ও (আবু)। আগে এক বার মেরে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছিল আমার। তখন মা আমাকে বাপের বাড়িতে নিয়ে চলে আসে। ওই ঘটনার প্রায় পাঁচ বছর পরে আমার বাপেরবাড়িতে এসে ক্ষমা চেয়ে নিয়ে আমাদের সঙ্গে থাকতে শুরু করে স্বামী।’’
মঙ্গলবারের ঘটনা নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আজ একটু নেশা করেছিল। আমি বলেছিলাম, ‘কেন নেশা করে বাড়ি এসেছ?’ তাতেই কাটারি নিয়ে আমার গলায় কোপ বসিয়ে দেয় ও। তখন ছেলে ছাড়াতে আসে। তাকেও কোপ দেয়। আমার আমার মা ছাড়াতে এলে তাকেও কোপ বসিয়ে দেয়। আমি ভয় পেয়ে পালিয়ে আসি বাইরে। সেই সময় আমার বড় জেঠু, জেঠিমা— সবাইকে কুপিয়েছে। মোট ছয় জনকে কোপ বসিয়েছে। আমি ওর কঠোর শাস্তি চাই।”