বিক্ষোভের মুখে সোহম-কুণাল। নিজস্ব চিত্র।
বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে গিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের মুখে কুণাল ঘোষ, সোহম চক্রবর্তীরা। মুহুর্মুহু স্লোগান, পাল্টা স্লোগানে উত্তপ্ত হয়ে উঠল পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুর। বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠান যেন হয়ে উঠল দুই গোষ্ঠীর শক্তি প্রদর্শনের আখড়া। শেষমেশ কুণাল, সোহম, অখিল গিরিদের মঞ্চ থেকে নেমে এসে কর্মীদের ক্ষোভ প্রশমন করতে হল।
ভগবানপুরের ভীমেশ্বরী হাইস্কুলের মাঠে বৃহস্পতিবার তৃণমূলের তরফে আয়োজন করা হয়েছিল বিজয়া সম্মিলনীর। দলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল, চণ্ডীপুরের বিধায়ক সোহমের পাশাপাশি আমন্ত্রিত ছিলেন রাজ্যের কারামন্ত্রী অখিল গিরি, এগরার বিধায়ক ও তৃণমূলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তরুণ মাইতি।
মঞ্চে অনুষ্ঠান শুরু হতেই দেখা যায় দুই গোষ্ঠীর গোলমাল। মুহুমুর্হু স্লোগান, পাল্টা স্লোগানে অনুষ্ঠান তখন ‘মাথায় উঠেছে’। বিবদমান দুই পক্ষের মধ্যে একাংশের অভিযোগ অনুষ্ঠানের পোস্টারে কেন সভাপতি তরুণের নাম চেয়ারম্যান অভিজিৎ দাসের নামের পর রাখা হয়েছে! অন্য পক্ষের তরফেও যুক্তি দেওয়া হয়। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছয় যে, মঞ্চ থেকে কুণালদের কর্মী সমর্থকদের শান্ত করতে দেখা যায়। এক সময় কুণাল, সোহমরা নেমে আসেন মঞ্চ থেকে। উত্তেজিত কর্মী, সমর্থকদের কাঁধে, পিঠে হাত রেখে তাঁদের বোঝাতে দেখা যায়। বেশ কিছু ক্ষণ গোলমাল চলার পর শান্ত হয় পরিস্থিতি।
ঘটনার পর কুণাল বলেন, ‘‘যাঁরা এসেছিলেন, কাছে ডেকে কাঁধে হাত রেখে কথা বলেছি। মান, অভিমান থাকতেই পারে। দুঃখও পেতে পারেন। এটাই স্বাভাবিক। এ নিয়ে আমরা আলোচনা সেরে নেব। কারও মনে কোনও দুঃখ থাকবে না, কথা দিচ্ছি।’’
যাঁর নাম দেওয়া নিয়ে বিবাদ সেই কাঁথি সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল সভাপতি তরুণ অবশ্য গোলমালের বিষয় মানতে চাননি। তাঁর দাবি, দলের প্রোটোকল অনুযায়ী সব হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘প্রোটোকল অনুযায়ী, প্রথমে নাম থাকবে চেয়ারম্যানের। তার পর সভাপতির নাম আসবে।’’
বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে এমন গোলমাল নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে দেরি করেনি বিজেপি। বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুদাম পণ্ডিত বলেন, ‘‘রাজ্য জুড়ে তৃণমূলের অপশাসন চলছে। একের পর এক দুর্নীতিতে জড়াচ্ছে তৃণমূল নেতাদের নাম। এই দলে কোনও অনুশাসন নেই। তারই ফলশ্রুতি এই ঘটনা।’’
এই প্রসঙ্গে তৃণমূলকে কটাক্ষ করেছেন বিরোধী দলনেতা তথা নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীও। তিনি বলেন, ‘‘এটা অন্য রাজনৈতিক দলের ব্যাপার। অনেক দিন ধরেই বলছি, ওখানে বিভিন্ন স্তরের কর্মচারী রয়েছেন। যাঁরা প্রসাদ পাচ্ছেন না, তাঁরা বিক্ষুব্ধ হচ্ছেন। জেনেশুনেই এঁরা দলটা করছেন। ন্যূনতম মর্যাদা নেই বলেই আমি ওই দলটা ছেড়ে এসেছি।’’