মেদিনীপুর শহরের গোলকুয়াচকের একটি দোকানে ভিড়। রবিবার। নিজস্ব চিত্র।
শেষবেলায় পুজোর বাজার জমল মেদিনীপুরে। বন্যার রেশ কাটিয়ে ঘাটালেও চলল কেনাকাটা। কেনাকাটায় উচ্ছ্বাস দেখা গেল ঝাড়গ্রামে। দেবীর বোধনের আগে শেষ রবিবারে হাসি ফুটল ব্যবসায়ী-দোকানদারদের মুখে।
মেদিনীপুর শহরের বড়বাজার-সহ অন্য বাজারে রবিবার ভিড় দেখা গিয়েছে। কেনাকাটা চলেছে। শপিং মলেও ভিড় ছিল। গত কয়েক বছরে শহরে শপিং মলের সংখ্যা বেড়েছে। মেদিনীপুর ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক মলয় রায় বলেন, "এদিন বাজারে ভিড় ছিল।" আর জি কর কাণ্ড এবং বন্যা— এই দুইয়ের জেরে পশ্চিম মেদিনীপুরের সে ভাবে জমছিল না পুজোর বাজার। পুজোর আগে শেষ রবিবারে অবশ্য ভিড় হয়েছে। ফুটপাথের দোকানেও বিক্রি ভালই হয়েছে। বড়বাজারের এক শাড়ি বিক্রেতার কথায় জানা গেল, গত সপ্তাহান্তে খদ্দের এসেছে হাতেগোনা। তবে এই সপ্তাহে অনেকে এসেছেন। কেনাকাটা করেছেন। এ দিন গড়বেতার তিনটি ব্লকের পোশাক পরিচ্ছদের দোকান গুলিতে ক্রেতাদের ভিড় দেখা গিয়েছে।
খড়্গপুরের গোলবাজারে গত রবিবারের তুলনায় এই রবিবার ক্রেতাদের ভিড় কিছুটা বেড়েছে। যদিও কেনাকাটার ক্ষেত্রে কম দামের জিনিসপত্র বেশি কিনতে দেখা যাচ্ছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, বাজারে আসা ক্রেতাদের হাতে টাকা কম। তা ছাড়া অনেকেই অনলাইন থেকে কেনাকাটার শেষে টুকটাক কেনাকাটা করতে বাজারে এসেছিলেন। সেই সঙ্গে আর জি করের প্রভাবও একেবারেই যে নেই, তা নয় বলেই মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। তবে যে হেতু পুজোর আয়োজন হচ্ছে শহরে সে ক্ষেত্রে কেনাকাটায় সামান্য মুনাফার আশায় পোশাক মজুত করেছিলেন ব্যবসায়ীরা।
তবে শেষ রবিবারও হাসি ফোটাতে পারেনি বলে দাবি করেছেন গোলবাজারের কাপড় ব্যবসায়ী জয় সাহা। তবে এ দিন সন্ধ্যায় শহরের মালঞ্চ ও ইন্দায় থাকা শপিং কমপ্লেক্সগুলিতে ক্রেতাদের ভাল ভিড় হয়েছিল। এমনকি মালঞ্চ রোডে কয়েকটি শপিং মলের বাইরে যানজটও দেখা যায়।
এ বার ডেবরায় বন্যা হওয়ায় সেখানের বাজারে পুজোর আগের শেষ রবিবারেও কেনাকাটা সন্তুষ্ট করতে পারেনি ব্যবসায়ীদের। ডেবরার পোশাক ব্যবসায়ী নির্মল কলা বলেন, "বাজার শেষ রবিবারেও জমল না। বন্যা হওয়ায় চারটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মানুষ প্রায় আসছেই না। অনেক পোশাক মজুত করেছি। মহাজনদের টাকা পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু বাজারে যারা আসছেন তাঁদের কেনাকাটার পরিমাণ এতটাই কম যে তেমন মুনাফাই নেই।" ঘাটালের বন্যার রেশ কাটিয়ে শেষ রবিবারে তুলনায় জমে উঠল পুজোর বাজার। তবে সব দোকানে ভিড় হয়েছে এমনটা নয়। ঘাটালের বিভিন্ন শপিং মল ও কাপড়ের দোকানগুলিতে এদিন ক্রেতাদের ভিড় চোখে পড়ে। ছেলেদের রেডিমেড পোশাকের দোকানে ভিড় ছিল। তা ছাড়া জুতোর দোকান ও অন্যান্য প্রসাধনী দোকানগুলিতেও এ দিন ভিড় ছিল। বেলদা, কেশিয়াড়ি, নারায়ণগড়, দাঁতন, মোহনপুরে এ দিন বাজার জমেছে। সন্ধ্যায় বেলদাতে যানজট সামলাতে হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে। বেলদার এক ব্যবসায়ী রাজকুমার চাণ্ডক বলেন," বৃষ্টি আর অনলাইন কারবারের জন্য এবার দোকানে বিক্রি তেমন নেই। তবু খানিকটা এ দিন বিক্রি হয়েছে।"
ঝাড়গ্রামে এ দিন কেনাকাটার ভিড় দেখে মনে হতেই পারে আর জি করের শোকের আবহ কি তবে বদলে গেল উচ্ছ্বাসে! পুজোর আগের শেষ রবিবারে ঝাড়গ্রাম শহরের জুবিলি মার্কেটে উপচে পড়ল ভিড়। জুবিলি মার্কেটের এক কাপড় দোকানের মালিক জলু কুণ্ডু বলছেন, ‘‘বৃষ্টি হয়নি। আবহাওয়া ভাল ছিল। ভিড় সামলাতে হিমসিম খেয়েছি। ’’