এগরার বিয়েবাড়িতে যোগ দেওয়া করোনা-আক্রান্ত বৃদ্ধের দুই আত্মীয়কে নিয়ে বেলেঘাটা আইডির পথে স্বাস্থ্যকর্মীরা।—ফাইল চিত্র।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) নির্দেশিকা মেনে করোনা আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসায় সুরক্ষা বিধি আদতে কি মানা হচ্ছে!
এগরার দুই করোনা আক্রান্ত রোগীকে বেলেঘাটা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় সমাজ মাধ্যমে এই নিয়ে প্রশ্ন তুলছে অনেকে। অভিযোগ উঠেছে, করোনা সংক্রমণে নিশ্চিত সুরক্ষায় পিপিই গ্রাউনের পরিবর্তে রোগী এবং নার্সদের পরানো হচ্ছে রেনকোট। যদিও পূর্ব মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, এগুলো রেনকোট নয়। ‘হু’-র নিয়মবিধি মেনে নিশ্চিত সুরক্ষায় পিপিই গাউনের পোশাক পরানো হয়েছে।
এগরায় গত ১৫ মার্চ চিকিৎসক আত্মীয়ের ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে এসে অসুস্থ হওয়ার পরেই করোনায় আক্রান্ত হন কলকাতার এক বৃদ্ধ। ঘটনার পরে এগরার ওই চিকিৎসক পরিবারের সকল সদস্য সহ বৃদ্ধের সংস্পর্শে আসা ১৩ জনকে এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে কোয়রান্টিনে রাখা হয়েছে। ভর্তির পরে তাঁদের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে নাইসেডে পাঠানো হয়। ২৮ মার্চ তাঁদের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট আসে স্বাস্থ্য দফতরে। রিপোর্টে দেখা যায় চিকিৎসকের স্ত্রী এবং বৃদ্ধা পিসিমা করোনায় আক্রান্ত। পরিবারের বাকি ১১ জনের রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।
শনিবার রাতে স্ত্রী ও বৃদ্ধা পিসিমাকে সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে স্থানান্তরিত করা হয়। পরিস্থিতি বুঝে রবিবার সকালে করোনা আক্রান্ত দু’জনকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
অভিযোগ নিয়ম বহির্ভূত ভাবে পিপিই গ্রাউন পরানোর পরিবর্তে বাজার থেকে সস্তার রেনকোট পরিয়ে আক্রান্তদের কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়। একই পোশাক পরেছিলেন আক্রান্তের পরিষেবায় যুক্ত নার্সরা। যে অ্যাম্বুল্যান্সে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল সেই গাড়ির চালক এবং সহকর্মীরাও একই ধরনের পোশাক পরেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়মে চিকিৎসকদের করোনা সংক্রমণ রুখতে পিপিই ব্যবহার করতে হবে। এই পিপিই তিন স্তর বিশিষ্ট ভাইরাস-ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধ ও স্বাভাবিক শ্বাস প্রশ্বাসের উপযোগী। সেই সঙ্গে হেডমাস্ক, মেডিক্যাল এন-৯৫ মাস্ক, গগলস, বুট এবং শু-কভার থাকতে হবে। এই পোশাকগুলি মাত্র একবারই ব্যবহার যোগ্য। কিন্তু এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে যে ধরনের পোশাক ব্যবহার করা হয়েছে তা দু’টি অংশ পাজামা এবং জামায় বিভক্ত রয়েছে। সে ক্ষেত্রে সহজেই ফাঁকা জায়গা দিয়ে শরীরে ভাইরাস সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা থাকছে।
যদিও পিপিই গ্রাউনের পরিবর্তে রেনকোট ব্যবহারের অভিযোগ মানতে নারাজ জেলা স্বাস্থ্য দফতর। তাদের দাবি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা অনুযায়ী সর্বোচ্চ সুরক্ষা বিধি মেনে পিপিই, মাস্ক পরেছিলেন রোগী এবং চিকিৎসক ও নার্সরা। এই পিপিই গুলি একটু আলাদা রকমের। দুই অংশে বিভক্ত। তাই এই অভিযোগ ভিত্তিহীন।