গন্ডগোলের পর বিশ্ববিদ্যালয়ে জটলা। —নিজস্ব চিত্র।
মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নবীনবরণকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বচসার অভিযোগ। সেই বচসা ক্রমে গড়াল হাতাহাতি পর্যন্ত। এই ঘটনায় দুই পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। দুই ছাত্রী-সহ চার জনকে আহত অবস্থায় ইতিমধ্যেই মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। সেখানেই তাঁদের চিকিৎসা চলছে। আহতদের দেখতে তৃণমূল নেতৃত্ব হাজির হয়েছেন হাসপাতালে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া প্রথম বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের জন্য বৃহস্পতিবার আয়োজন করা হয়েছিল নবীনবরণ উৎসব। সন্ধ্যায় ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেই অনুষ্ঠান চলাকালীনই তৃণমূলের একটি গোষ্ঠীর লোকজন এসে হামলা চালায় বলে অভিযোগ অপর এক গোষ্ঠীর। এ বিষয়ে নবীনবরণ উৎসব কমিটির সদস্য শেখ আশফাক বলেন, “আমাদের উপর দায়িত্ব ছিল কলেজের নতুন ছেলেমেয়েদের জন্য নবীনবরণ উৎসব আয়োজন করার। সব কিছু ঠিকঠাকই চলছিল। হঠাৎ কয়েক জন বহিরাগত ছেলে এসে অনুষ্ঠানে ব্যাঘাত ঘটায় এবং মারপিট করে। ওই বহিরাগতদের সঙ্গে হস্টেলের কিছু ছেলে যোগ দেয়। মেয়েদেরকেও মারধর করা হয়। বেশ কয়েক জন আহত হয়েছে। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।” বহিরাগতরা কারা তা এখনও শনাক্ত করা যায়নি বলেও জানান আশফাক।
হস্টেল সভাপতি তথা অনুষ্ঠানের আয়োজক আকাশ মণ্ডল বলেন, “আমি অনুষ্ঠানটির মূল আয়োজক। আগত অতিথিদের দেখাশোনার দায়িত্ব আমার উপরেই ছিল। অনুষ্ঠান চলাকালীন কলেজের একটা জায়গায় খানিকটা গন্ডগোল হয়। সকলে মিলে সেটি প্রাথমিক ভাবে সামাল দিলেও খানিক ক্ষণ পরেই ফের বচসা শুরু হয়। এর পর কয়েক জন সিনিয়র এসে গ্রিনরুমে আমার বন্ধুকে বেধড়ক মারধর শুরু করেন। প্রতিবাদ করতে আমাকেও মারধর করেন তাঁরা। এর ফলে অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। মেয়েদের গায়েও হাত দেওয়া হয়।”
হস্টেলের এক ছাত্র শুভদীপ দে বলেন, “অনুষ্ঠান আজ ঠিকঠাকই চলছিল। সন্ধ্যার পরেই একটা অংশে মারপিট শুরু হয়। এর মধ্যে ছাত্ররা কেউ জড়িত ছিলেন না। এর কিছু পরেই গ্রিনরুমে পাঁচ-ছ’জন বাঁশ, লাঠিসোঁটা হাতে ঢুকে পড়েন। ওই সময় আমি, হস্টেল সভাপতি আকাশ-সহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে এক জনের বুকে লাথি মেরে ফেলে দেওয়া হয়। এবং তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয়।” শুভদীপ আরও বলেন, “আকাশ এবং সেখানে উপস্থিত আরও কয়েক জনকে মার খেতে দেখে তা প্রতিহত করতে গিয়ে আমিও আহত হয়েছি। সঙ্গে ছাত্রদের আরও বেশ কয়কজন আহত হয়েছে। যারা মারধর করছিলেন তাঁরা হুমকি দিয়ে ছাত্রদের সেখান থেকে চলে যেতে বলেন।” এর পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন শুভদীপ। অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি তুলে তিনি বলেন, “বাইরে থেকে যাঁরা আমাদের গায়ে হাত তুললেন তাঁদের শাস্তি চাই। আমাদের কী অন্যায় ছিল? আমাদের হস্টেলে ঢুকে মারধর করার হুমকিও দেওয়া হয়েছে। কোনও পদক্ষেপ না করা হলে কাল থেকেই আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনে বসব।”
এ বিষয়ে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।