নির্বাচন কমিশনের বেঁধে দেওয়া খরচের সীমার কাছাকাছি পৌঁছেছেন মালদহের কোতোয়ালির মামা-ভাগ্নি।—ফাইল চিত্র
পথ হারায়নি পশ্চিমবঙ্গ। এখানকার শাসক বা বিরোধী, কোনও শিবিরের প্রার্থীরাই নির্বাচন কমিশনের বেঁধে দেওয়া খরচের সীমা ছাড়াননি।
লোকসভা ভোটে বড় রাজ্যগুলির ক্ষেত্রে ৭০ লক্ষ টাকা খরচ করতে পারতেন প্রার্থীরা। সেই খরচের কাছাকাছি পৌঁছেছেন মালদহের কোতোয়ালির মামা-ভাগ্নি। তাঁদের সঙ্গী বর্ধমানের দুই তৃণমূল প্রার্থী। অন্য দলের থেকে খরচ অনেকটাই কম সিপিএম প্রার্থীদের। দল থেকে ২০ লক্ষ টাকা করে পেয়েছেন বেশির ভাগ তৃণমূল প্রার্থী। বিজেপি প্রার্থীদের বেশির ভাগই দল থেকে পেয়েছেন ৪০ লক্ষ টাকা। কমিশনে জমা পড়া হিসেব জানাচ্ছে, সদ্য সমাপ্ত ভোটে এটাই বিভিন্ন দলের প্রার্থীদের খরচ।
সময়মতো কমিশনে খরচের হিসেব দেননি আসানসোলের তারকা তৃণমূল প্রার্থী মুনমুন সেন। অসুস্থতার জন্য তিনি যথাসময়ে তা জমা দিতে পারেননি বলে দলীয় সূত্রের খবর।
মালদহ উত্তর কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী ছিলেন কংগ্রেস ছেড়ে আসা মৌসম বেনজির নুর। রাজ্যের প্রার্থীদের খরচের তালিকায় শীর্ষে আছেন তিনি। ৬৯,৮৭,৪৬৯ টাকা খরচ করেছেন গনি খান চৌধুরীর ভাগ্নি। হেরেছেন বিজেপির কাছে। তাঁর পরেই রয়েছেন বর্ধমান পূর্বের জোড়াফুলের প্রার্থী সুনীল মণ্ডল। তাঁর খরচ ৬৯,৩০,৭৫০ টাকা। বিজেপিকে হারিয়েছেন তিনি। তাঁর কাছাকাছি রয়েছেন মৌসমের মামা আবু হাসেম খান চৌধুরী (ডালু)। মালদহ দক্ষিণের এই কংগ্রেস প্রার্থীর খরচ ৬৯,১২,৭২৭.৩৩ টাকা। দল থেকে ৫০ লক্ষ টাকা পেয়েছেন গনির ভাই ডালু। বর্ধমান দুর্গাপুর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মুমতাজ সঙ্ঘমিতার খরচ ৬৯,০১,৬২২ টাকা।
বিজেপি প্রার্থীদের মধ্যে খরচের নিরিখে প্রথম মেদিনীপুরের প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। তাঁর খরচ ৬০,২৬,২২৬ টাকা। দ্বিতীয় আলিপুরদুয়ারের প্রার্থী জন বার্লা, খরচ ৫৫,৯০৮,১৩.৩৫ টাকা। কাছাকাছি রয়েছেন ঘাটাল এবং ব্যারাকপুরের প্রার্থী যথাক্রমে ভারতী ঘোষ এবং অর্জুন সিংহ। তাঁদের খরচ ৫২ লক্ষ টাকার কিছুটা বেশি।
কংগ্রেস প্রার্থীদের মধ্যে খরচের শীর্ষে পুরুলিয়ার নেপাল মাহাতো। তাঁর খরচ ৬৩,৭৫,৬২৬ টাকা। তার মধ্যে দল দিয়েছে ৬০ লক্ষ। কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা অধীর চৌধুরীর নির্বাচনী খরচ ৩৯,৬৭,৬৬৪ টাকা। দল তাঁকে দিয়েছে ৫০ লক্ষ।
রায়গঞ্জের সিপিএম প্রার্থী মহম্মদ সেলিমের নির্বাচনী খরচ ২১,৩৯,২৬১ টাকা। দল দিয়েছিল মাত্র ১০ হাজার। জলপাইগুড়ির তৃণমূল প্রার্থী বিজয়চন্দ্র বর্মণের মোট ৬০,০৬,৬৩৩ টাকা খরচ হলেও দল থেকে তিনি কিছুই পাননি। তমলুকের কংগ্রেস প্রার্থী লক্ষ্মণ শেঠের নির্বাচনী খরচ ৯,১৬,০১৭ টাকা, দল তাঁকেও কিছুই দেয়নি। ঝাড়গ্রামের সিপিএম প্রার্থী দেবলীনা হেমব্রমের খরচ ৭,৩৪,৩৬৭ টাকা।
ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল প্রার্থী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী খরচ ছিল ৬৪,২১,৮৭৮ টাকা। ওই কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী ফুয়াদ হালিম ১০,০৪,,৬০৪ টাকা খরচ করেছেন।
তারকা প্রার্থীদের মধ্যে কম খরচ করেছেন বসিরহাটের তৃণমূল প্রার্থী নুসরত জাহান রুহি। তাঁর নির্বাচনী খরচ ৩০,২১,৩৩৮ টাকা। নুসরতের দ্বিগুণ, ৬২,৫১,৯৭১ টাকা খরচ করেছেন ঘাটালের তারকা তৃণমূল প্রার্থী দীপক অধিকারী (দেব)। ৪৩,৩৭,২৩২ টাকা খরচ করেছেন যাদবপুরের তৃণমূল প্রার্থী, অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী। বিজেপির দুই তারকা প্রার্থী হুগলির লকেট চট্টোপাধ্যায় ৩৪,৩৩,৬৬৭.৯০ টাকা ও আসানসোলের বাবুল সুপ্রিয় ৪৪,১৩,৬৫৭ টাকা খরচ করেছেন।