সিবিআই দফতর থেকে বেরিয়ে শিক্ষাসচিব মণীশ জৈন। নিজস্ব চিত্র।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার আগেই সিবিআই দফতরে পৌঁছে গিয়েছিলেন রাজ্যের শিক্ষাসচিব মণীশ জৈন। ১০টা ২০ মিনিট নাগাদ তাঁকে নিজাম প্যালেসে ঢুকতে দেখা যায়। সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মণীশ যখন নিজাম প্যালেস থেকে বেরোলেন, তখন ঘড়ির কাঁটায় সন্ধ্যা ৬.৪০। অর্থাৎ, ৮ ঘণ্টা ২০ মিনিট তিনি সিবিআই দফতরে ছিলেন। এই সময়ের মধ্যে তাঁকে কী নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল, বেরিয়ে সাংবাদিকদের তা জানিয়েছেন মণীশ।
সিবিআই দফতর থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন শিক্ষাসচিব। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, সিবিআই কী কী জানতে চেয়েছে তাঁর কাছে? উত্তরে মণীশ জানান, শিক্ষা দফতরের কাজের প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। মণীশ বলেন, ‘‘আমাদের দফতরে যে নিয়ম এবং পদ্ধতি মেনে কাজ হয়, তা জানার জন্য সিবিআই আজ আমাকে ডেকেছিল।’’
তিনি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়োগ সংক্রান্ত ফাইল পাঠাতেন কি না, সেই প্রশ্নের জবাবে মণীশ বলেন, ‘‘ফাইল তো নিজেই নিজের কথা বলে।’’ এর পর শিক্ষাসচিব আরও বলেন, ‘‘আলাদা একটি সংস্থা স্বাধীন ভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া পরিচালনা করে। তাতে সরকারের ভূমিকা থাকে না। সে সবই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
শিক্ষা দফতরের কাজের পদ্ধতি এবং নিয়োগ সংক্রান্ত যা যা নথি চাওয়া হয়েছিল, সিবিআইয়ের কাছে তা জমা দিয়ে এসেছেন মণীশ। তিনি জানান, পরবর্তীতে আর কোনও তথ্য বা নথি চাওয়া হলে তিনি কেন্দ্রীয় সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা করবেন।
সিবিআই সূত্রে খবর, জিজ্ঞাসাবাদের মুখে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তদন্তকারীদের জানিয়েছিলেন, শিক্ষাসচিব তাঁর কাছে নিয়োগ সংক্রান্ত যে ফাইল পাঠাতেন, তাতে তিনি সই করে দিতেন মাত্র। এমনকি, পার্থ বহু বার প্রকাশ্যেও দাবি করেছেন যে, তিনি শিক্ষা দফতরের মন্ত্রী ছিলেন মাত্র। নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি কোনও সিদ্ধান্ত নিতেন না। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, সেই সিদ্ধান্ত কে নিতেন? কার নির্দেশে তবে নিয়োগ সংক্রান্ত ফাইল শিক্ষাসচিব মণীশের হাত ঘুরে তাঁর কাছে পৌঁছত? সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি রাজ্যের শিক্ষাসচিব মণীশের ব্যাপারে বেশ কিছু নতুন তথ্য হাতে এসে পৌঁছেছে তাদের। তার মধ্যে পার্থকে ফাইল পাঠানোর বিষয়টিও থাকতে পারে। বৃহস্পতিবার তা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়ে থাকতে পারে শিক্ষাসচিবকে।
এর আগেও মণীশ তদন্তকারীদের মুখোমুখি হয়েছে। জানুয়ারি মাসেই রাজ্যের শিক্ষা বিভাগের সদর দফতর বিকাশ ভবনে হঠাৎ অভিযান চালিয়েছিলেন সিবিআই কর্তারা। বিকাশ ভবনের ৬ তলায় তাঁরা মণীশের ঘরেও যান। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদও করেন। সে দিন মণীশের কাছ থেকে কিছু প্রয়োজনীয় নথিও সংগ্রহ করেছিল সিবিআই। তার পর বৃহস্পতিবার সিবিআই দফতরে এসে হাজিরা দিয়ে গেলেন শিক্ষাসচিব।