মণীশ জৈন (বাঁ দিকে)। পার্থ চট্টোপাধ্যায় (ডান দিকে)। ফাইল চিত্র
স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে সিবিআইয়ের তলবে নিজাম প্যালেসে এসে পৌঁছলেন রাজ্যের শিক্ষাসচিব মণীশ জৈন। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার সময় তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দফতরে। মণীশ যদিও নিজাম প্যালেসে পৌঁছে যান সময়ের অনেক আগেই। সকাল সাড়ে ১০টার কিছু আগেই গাড়ি থেকে নেমে নিজাম প্যালেসে ঢুকতে দেখা যায় শিক্ষাসচিবকে। তাঁর হাতে ছিল বেশ কিছু ফাইল। সাংবাদিকেরা মণীশকে তাঁর হাজিরা নিয়ে প্রশ্ন করাতে হাসিমুখেই জবাব দেন তিনি। যদিও প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ফাইল পাঠানো নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মণীশ কিছু বলেননি।
সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি রাজ্যের শিক্ষাসচিব মণীশের ব্যাপারে বেশ কিছু নতুন তথ্য হাতে এসে পৌঁছেছে তাঁদের। অনুমান, এর মধ্যে নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থকে ফাইল পাঠানোর বিষয়টিও থাকতে পারে। সিবিআই সূত্রে খবর, জিজ্ঞাসাবাদের মুখে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তদন্তকারীদের জানিয়েছিলেন, শিক্ষাসচিব তাঁর কাছে নিয়োগ সংক্রান্ত যে ফাইল পাঠাতেন, তাতে তিনি সই করে দিতেন মাত্র। এমনকি, পার্থ বহু বার প্রকাশ্যেও দাবি করেছেন যে, তিনি শিক্ষা দফতরের মন্ত্রী ছিলেন মাত্র। নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি কোনও সিদ্ধান্ত নিতেন না। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, সেই সিদ্ধান্ত কে নিতেন? কার নির্দেশে তবে নিয়োগ সংক্রান্ত ফাইল শিক্ষাসচিব মণীশের হাত ঘুরে তাঁর কাছে পৌঁছত। মণীশকে বৃহস্পতিবার সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদে এই প্রশ্নের মুখেও পড়তে হতে পারে বলে অনুমান। কারণ, দীর্ঘ দিন ধরেই নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তকারী কেন্দ্রীয় সংস্থাটি দাবি করে আসছে, এই মামলায় আরও বড় কোনও মাথা জড়িত কি না তার সন্ধান করছে তারা।
বৃহস্পতিবার নিজাম প্যালেসে ঢোকার মুখে মণীশকে অবশ্য এই সব প্রশ্ন করা হলে তিনি শুধু কয়েকটি কথায় জবাব দিয়েছেন। মণীশ বলেন, ‘‘আমাকে ডাকা হয়েছিল। আমি এসেছি। বাকিটা ওঁরা বিশ্লেষণ করে দেখবেন।’’ মণীশের মুখে এই সময় কোনও চিন্তার অভিব্যক্তি দেখা যায়নি। বরং হাসিমুখেই সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন শিক্ষাসচিব। তার পর অবশ্য তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ তাঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছেন, তা কি সত্যি? তিনিই কি ফাইল পাঠাতেন পার্থকে? এর জবাবে অবশ্য মণীশ কোনও উত্তর না দিয়ে এগিয়ে যান নিজাম প্যালেসের ভিতরে।
এর আগেও মণীশ তদন্তকারীদের মুখোমুখি হয়েছে। জানুয়ারি মাসেই রাজ্যের শিক্ষা দফতরের সদর দফতর বিকাশ ভবনে হঠাৎ অভিযান চালিয়েছিলেন সিবিআই কর্তারা। বিকাশ ভবনের ছ’তলায় তাঁরা মণীশের ঘরেও যান। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদও করেন। সে দিন মণীশের কাছ থেকে কিছু প্রয়োজনীয় নথিও সংগ্রহ করেছিল সিবিআই।