প্রতীকী ছবি।
ভাইফোঁটায় দিদিকে স্যানিটারি ন্যাপকিন! একেবারে ছ’প্যাকেট। উপহার পেয়ে প্রথমে চমকে গেলেও হাওড়ার উলুবেড়িয়ার মহিষরেখার বাসিন্দা জয়িতা কুণ্ডু কুঁতি পরে খুশিই হন। সাদরে গ্রহণ করেন উপহার। অভিনন্দন জানান ভাই সৈকত পাত্রকে। ‘‘সমাজ বদলাচ্ছে’’— বলছেন জয়িতা।
জয়িতা পরিবেশ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। মহিলাদের ন্যাপকিন ব্যবহার নিয়েও সচেতন করেন। বছর পঁচিশের সৈকত তাঁর নিজের ভাই নন। তিনি ‘জয়িতাদি’র পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের সাথী। থাকেন পাশের কালিকাপুরে। তাঁর একটি স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরির কারখানা আছে। মঙ্গলবার তিনি জয়িতার বাড়িতে হাজির হন। দিদিকে প্রণাম করে তাঁর হাতে তুলে দেন প্যাকেটগুলি। জয়িতা ফোঁটা দিয়ে ভাইকে খেতে দেন চানা পনির, চিকেন কষা, ঠান্ডা পানীয়।
১১ জুন সৈকতের মাতৃবিয়োগ হয়। শ্রাদ্ধের দিনে জয়িতা তাঁকে একটা ছাতিম চারা উপহার দেন। সে তারই পাল্টা কিছু উপহার দেওয়ার ইচ্ছা ছিল সৈকতের। বলেন, ‘‘ব্যবসা সুত্রে জানি, ন্যাপকিন কিনতে মা-বোনেরা সঙ্কোচ বোধ করেন। সেই সঙ্কোচ ভাঙা দরকার। তা করতে হবে ছেলেদেরই। জয়িতাদি নিজের দিদির মতোই। তাই ঘর থেকেই সেই সঙ্কোচ ভাঙার কাজ শুরু করলাম।’’ জয়িতা বলেন, ‘‘উপহার দেখে অবাক হলেও ওকে অভিনন্দন জানিয়েছি। আশা জাগছে, সমাজ বদলাচ্ছে।’’ বাড়িতে ছিলেন জয়িতার মা পুতুলদেবী, দুই দাদা অপূর্ব ও রাজা। তাঁরাও উচ্ছ্বসিত। পুতুলদেবী বলেন, ভাইফোঁটা উপলক্ষে এমন উপহার দেখিনি। খুব ভাল লাগল।’’
মফস্সল শহরের একটি বাড়িতে ভাইফোঁটায় এমন উপহার সমাজের পক্ষে ইতিবাচক বলেই মনে করছেন মনোবিদদের একাংশ।