কৃষ্ণনগরের জনসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ফেসবুক থেকে
ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ গেলে সব পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হতে হবে। বুধবার নদিয়ার সভা থেকে রাজ্যবাসীকে এ ভাবেই সতর্ক করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনাচক্রে, বুধবারই কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের তরফে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এর আগে মমতার দল ভোটার তালিকা নিয়ে সর্বদল বৈঠকে সরব হয়। সেখানে তারা দাবি করেছিল, ষড়যন্ত্র করে কোনও ন্যায্য ভোটারের নাম বাদ দেওয়া যাবে না। সেই তালিকা প্রকাশের দিনই মমতার এমন মন্তব্য বিশেষ ভাবে তাৎপর্য পূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
বুধবার ২০২৩ সালের খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন। একই দিনে নদিয়ায় কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজের মাঠে মমতার সভা ছিল। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি যেটা করেছে, অনেক জায়গায় ৩০ শতাংশ লোকের নাম ভোটার লিস্ট থেকে বাদ দিয়ে দিয়েছে। আপনার নাম ভোটার লিস্টে আছে কি না নিজে দেখবেন।’’ মমতার আশঙ্কা, ‘‘আপনার নাম যদি ভোটার লিস্টে না থাকে তা হলে লক্ষ্মীর ভান্ডার থেকে শুরু করে আধার কার্ড, সব কিছু পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হবেন। কারণ বিজেপি সরকার, ভয়াবহ সরকার।’’ ভোটার লিস্টে যাতে সকলের নাম তা দলীয় কর্মীদের দেখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি, ভোটারদেরও সেই খোঁজ নিতে বলেন তিনি।
গত ২ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন সর্বদল বৈঠক ডাকে। সেখানে তৃণমূলের পক্ষে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। বৈঠকের পর অরূপও অভিযোগ তুলেছিলেন, ইদানীং অনেক রাজ্যেই ন্যায্য ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ চলে যাচ্ছে। তিনি বলেছিলেন, ‘‘প্রত্যেক ন্যায্য ভোটাদের নাম যেন তালিকায় থাকে। রাতের অন্ধকারে চক্রান্ত করে কারও নাম যাতে বাদ না যায়, সে কথা জানিয়েছি। অনেক রাজ্যেই এই ধরনের ঘটনা ঘটছে।’’ বাংলায় যাতে এমন ঘটনা কোনও ভাবেই না ঘটে, তৃণমূল সেই বিষয়টি কমিশনকে জানিয়েছে বলে দাবি করেছিলেন অরূপ। বুধবার মমতার মন্তব্যেও সেই সুরই ধরা পড়েছে।
ঘটনাচক্রে, বুধবার কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের তরফে যে খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে তাতে আগের বার অর্থাৎ ২০২২ সালের থেকে কমে গিয়েছে ১২ হাজারের বেশি ভোটার সংখ্যা। কমিশনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, নতুন ভোটারের নাম সংযোজন এবং মৃতদের নাম বাদ দেওয়ার সঙ্গে কিছু ভূতুড়ে ভোটারের নামও ছাঁটাই হয়েছে। তার ফলে কমেছে মোট ভোটারের সংখ্যা।