আগামী ৩০ নভেম্বর ডিএ মামলার পরবর্তী শুনানি ধার্য করেছেন হাই কোর্টের বিচারপতিরা।
রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) মেটানোর বিষয়ে কলকাতা হাই কোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছে, তা বাস্তবায়নের জন্য দিনের পর দিন অপেক্ষা করা যায় না। ডিএ নিয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং অর্থসচিবের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলায় বুধবার এমনই মন্তব্য উচ্চ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চের। শুধু তা-ই নয়, বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, ডিএ জট নিয়ে রাজ্য সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেও সেই মামলা এখনও স্থায়ী নম্বর পায়নি। ফলে আইন অনুযায়ী হাই কোর্ট মামলা শুনতেই পারে।
উচ্চ আদালতের ডিএ মামলায় নির্দেশ যথা সময়ে পালন না হওয়ায় রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী এবং অর্থসচিব মনোজ পন্থ শাস্তির মুখে পড়বেন কি না, তা নিয়েই বুধবার শুনানি ছিল। দুই আমলার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করেছিল রাজ্য সরকারি কর্মী সংগঠনগুলি। বিচারপতি হরিশ টন্ডন ও রবীন্দ্রনাথ সামন্তের বেঞ্চ সেই মামলায় স্পষ্ট জানায়, হাই কোর্টের রায় বাস্তবায়নের জন্য অনন্তকাল অপেক্ষা করা যায় না।
প্রসঙ্গত, গত ২০ মে এই ডিভিশন বেঞ্চই নির্দেশ দিয়েছিল, তিন মাসের মধ্যে রাজ্য সরকারকে কর্মীদের বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দিতে হবে। সেই নির্দেশ না মেনে আদালতে পুনর্বিবেচনার আর্জি জানায় রাজ্য। তাই, কর্মী সংগঠনগুলি আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করে। পরে রাজ্যের সেই পুনর্বিবেচনার আর্জিও খারিজ করে দেয় ডিভিশন বেঞ্চ।
আদালত অবমাননার মামলায় কেন তাঁদের শাস্তি দেওয়া হবে না, দুই আমলাকে তার কারণ দর্শাতে বলেছিল হাই কোর্ট। সেই মতো হরিকৃষ্ণ এবং মনোজ হলফনামাও দিয়েছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, রাজ্যে ভাঁড়ারে ডিএ মেটানোর মতো অর্থ নেই। তার পরেও ডিএ দেওয়া হলে আর্থিক বিপর্যয় ঘটতে পারে। পাশাপাশি, উচ্চ আদালত যে হিসাবে ডিএ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেই শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য।
কর্মী সংগঠনগুলির আশঙ্কা, ডিএ দেওয়ার প্রক্রিয়া বিলম্বিত করতেই সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে রাজ্য। পাশাপাশিই, রাজ্য সরকারি কর্মীদের দাবি, সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যের দায়ের করা মামলায় ১০টি ত্রুটি রয়েছে। যদিও হাই কোর্ট বুধবার স্পষ্ট করে দিয়েছে, সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যের দায়ের হওয়া মামলায় এখনও স্থায়ী নম্বর না পাওয়ায় উচ্চ আদালতে ডিএ মামলার শুনানি চালিয়ে যেতে কোনও বাধা নেই। সেই মতো আগামী ৩০ নভেম্বর ডিএ মামলার পরবর্তী শুনানি ধার্য করেছেন হাই কোর্টের বিচারপতিরা।