Babul Supriyo and Abhijit Gangopadhyay

দ্বিতীয় হুগলি সেতুর বাগ্‌যুদ্ধ! বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়লেন তৃণমূলের মন্ত্রী বাবুল এবং বিজেপির সাংসদ অভিজিৎ

বাবুল সুপ্রিয় এবং অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় প্রকাশ্যে তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়লেন দ্বিতীয় হুগলি সেতুতে। প্রায় ১৫-২০ মিনিট ধরে দুই নেতার বাগ্‌বিতণ্ডা চলে বলে অভিযোগ।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২৫ ২৩:০৭
Share:

শুক্রবার রাতে দ্বিতীয় হুগলি সেতুর কাছে বচসা। রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে রয়েছেন বাবুল সুপ্রিয়। তাঁর সামনে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের গাড়ি। —নিজস্ব চিত্র।

দ্বিতীয় হুগলি সেতুর উপর তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়লেন দুই রাজনীতিক। এক দিকে তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় এবং অন্য দিকে বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। শুক্রবার রাতে প্রায় ১৫-২০ মিনিট ধরে বচসা চলে দুই নেতার। গাড়ি নিয়ে হাওড়ায় তাঁর বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন বাবুল। অভিজিতের গাড়িও কলকাতা থেকে হাওড়ার দিকে যাচ্ছিল। সেই সময়েই দুই নেতার মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা শুরু হয়।

Advertisement

বাবুলের দাবি, তিনি নিজেই গাড়ি চালিয়ে ফিরছিলেন। সেই সময় পিছন থেকে হুটার বাজিয়ে প্রচণ্ড গতিতে একটি গাড়ি আসছিল। সেটি বাবুলের গাড়িকে অতিক্রম করে যাওয়ার চেষ্টা করে। বাবুল সে সময় মুখ বার করে অপর গাড়ির চালককে ঠিক ভাবে গাড়ি চালানোর কথা বলেন। বাবুলের দাবি, তিনি দ্বিতীয় গাড়ির চালককে বলেন, “এ ভাবে গাড়ি চালাচ্ছেন কেন? আপনি তো লোককে মেরে দেবেন! আমার গাড়ির সঙ্গে ঠেকে গেলে তো দুর্ঘটনা ঘটে যাবে।” তৃণমূল বিধায়কের দাবি, সেই সময় দ্বিতীয় গাড়ির পিছন থেকে কেউ এক জন “চালা দে, চালা দে” বলে ওঠেন। অর্থাৎ, গাড়ি নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার কথা বলেন চালককে।

এর পর দ্বিতীয় গাড়িটি কিছুটা এগিয়ে যাওয়ার পর সেটিকে আবার থামান বাবুল। তাঁর দাবি, সেই সময় গাড়ির পিছনের আসনে বসে ছিলেন তমলুকের বিজেপি সাংসদ। গাড়িতেও ‘এমপি তমলুক’ লেখা ছিল বলে দাবি তৃণমূল নেতার। বাবুল জানান, তিনি সাংসদকে দেখতে পেয়ে গাড়ির পিছনের দিকে গিয়ে কথা বলার চেষ্টা করেন। গাড়ির চালককে সঠিক ভাবে চালানোর কথা বলতে অনুরোধ করেন। বাবুলের দাবি, সেই সময় সাংসদ তাঁকে বলেন, “যা করেছে বেশ করেছে!” তাঁকে গালিগালাজও করা হয় বলে দাবি বাবুলের। তত ক্ষণে দুই নেতার বচসায় আশপাশে স্থানীয় মানুষজনের ভিড় জমে যায়। স্থানীয়দের দাবি, তখন বাবুল সাংসদকে ক্ষমা চাওয়ার জন্য বলেন। ক্ষমা না চাইলে সাংসদের গাড়ি তিনি এগোতে দেবেন না, এ কথাও তিনি বলেন।

Advertisement

বাবুলের দাবি, সাংসদ তাঁর কাছে ক্ষমা চাওয়া তো দূর, বরং পুনরায় তাঁকে গালিগালাজ করেন। “যা বলেছি বেশ করেছি, আবার বলব”, এমন কথাও বিজেপি সাংসদ তাঁকে শুনিয়েছেন বলে দাবি তৃণমূল বিধায়কের। বাবুলকে ‘দেখে নেওয়ার’ হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। প্রায় ১৫-২০ মিনিট ধরে এই বচসা চলে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। বাবুলের দাবি, সাংসদ গাড়ি থেকে নামেননি। ক্ষমাও চাননি।

মন্ত্রীর এই অভিযোগ প্রসঙ্গে বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়। অভিজিতের বক্তব্য, বেপরোয়া গতি থাকলে পুলিশ নিশ্চয়ই ব্যবস্থা গ্রহণ করত। তাঁর দাবি, গাড়ির সামনে ‘এমপি তমলুক’ লেখাটি দেখতে পান বাবুল। সেটি দেখেই বাবুল নিজের গাড়িকে জোরে চালিয়ে তাঁর গাড়ির সামনে এনে দাঁড় করান। উল্টে বাবুলই সাংসদের গাড়ির সামনে গালিগালাজ শুরু করেন বলে দাবি বিজেপি সাংসদের। তাঁর বক্তব্য, প্রথমে তিনি বুঝতে পারেননি ওই গাড়িতে বাবুল রয়েছেন। মন্ত্রী গাড়ি থেকে নামার পর তিনি বুঝতে পারেন। তর্কাতর্কির সময় গাড়ির জানালা দিয়ে বাবুল হাত প্রবেশ করান বলেও দাবি সাংসদের। অভিজিৎ জানান, এর ফলে তাঁর মোবাইল হাত থেকে পড়ে যায় এবং সেটির কিছুটা ক্ষতিও হয়। বাবুল মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন বলেও দাবি বিজেপি সাংসদের।অভিজিৎ বলেন, “মত্ত অবস্থায় বাবুল সুপ্রিয় বেশ কিছু ক্ষণ লাফালাফি করেন। চিৎকার, চেঁচামেচি করেন। তার ভিডিয়োও রয়েছে আমার কাছে।”

সাংসদের দাবি, তিনি মানুষের ‘চাকরি খেয়েছেন’ বলে মন্তব্য করেন বাবুল। তার জবাবে তিনিও বলেছেন, “তাতে আপনার গায়ে জ্বালা করছে কেন? আপনারা তো চাকরি বিক্রি করেছিলেন।” এই ঘটনা নিয়ে অভিজিৎ আইনের দ্বারস্থ হবেন বলেও জানিয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement