দক্ষিণ ২৪ পরগনায় প্রতিবাদে সিপিএম নেতৃত্ব। —নিজস্ব চিত্র।
চোরে-কামারে দেখা হল না। কিন্তু সিঁদকাঠি তৈরি হয়ে গেল! অনেকটা এই কায়দাতেই গত লোকসভা ভোটে আসন সমঝোতা হয়ে গিয়েছিল কংগ্রেস ও সিপিএমের। এ বার বিধানসভা উপনির্বাচনে দু’পক্ষের সমঝোতার সলতে পাকানোই হল না। আলাদা করে লড়াইয়ের জন্যই প্রস্তুতি নিচ্ছে দুই শিবির। তবে একই সঙ্গে ভবিষ্যতের কথা ভেবে দরজা খুলে রাখার কথা বলছেন দু’পক্ষের নেতৃত্ব।
আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে রবিবার সন্ধ্যায় রাজ্য বামফ্রন্টের দ্বিতীয় দফার বৈঠক বসেছিল উপনির্বাচন নিয়ে। সূত্রের খবর, সেখানে ঠিক হয়েছে, আসন্ন উপনর্বাচনে কোচবিহারের সিতাইয়ে ফরওয়ার্ড ব্লক, আলিপুরদুয়ারের মাদারিহাটে আরএসপি, পশ্চিম মেদিনীপুরের মেদিনীপুর আসনে সিপিআই এবং বাঁকুড়ার তালড্যাংরায় সিপিএম লড়বে। উত্তর ২৪ পরগনার দুই আসন নৈহাটি ও হাড়োয়া নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। এই পরিস্থিতিতে আজ, সোমবার ফের বামফ্রন্টের বৈঠক ডাকা হয়েছে। মনোনয়ন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাওয়ায় সব জেলার বাম শরিক নেতৃত্বকে বলা হয়েছে আজকের মধ্যেই প্রার্থীদের নাম চূড়ান্ত করে ফেলতে। কংগ্রেসের তরফে কোনও বার্তা না-আসায় এ বার বাম শক্তি হিসেবেই লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বিমান বসুরা। তবে লোকসভা ভোটে আলাদা লড়লেও এই উপনির্বাচনে হাড়োয়া বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য নওসাদ সিদ্দিকীর দল আইএসএফ ফের যোগাযোগ করেছে বলে বাম সূত্রের খবর।
বিধান ভবনে এ দিনই প্রদেশ নির্বাচন কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছিল। কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, গত ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে এই ৬ কেন্দ্রের মধ্যে শুধু সিতাইয়ে কংগ্রেস লড়েছিল। তাই বামেদের তরফেই যোগাযোগের ‘দায়’ বেশি। কিন্তু বামেদের দিক থেকে এখনও পর্যন্ত সেই যোগাযোগ না-হওয়ায় প্রদেশ নির্বাচন কমিটি ৬ আসনের জন্যই সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঠিক করেছে। সেই তালিকা পাঠানো হবে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটির (সিইসি) অনুমোদনের জন্য। যে কমিটির অন্যতম সদস্য প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার অবশ্য বলছেন, ‘‘এর আগে দু’পক্ষ একই সঙ্গে এক রাস্তায় হেঁটেছে। এ বার রাস্তার দু’পাশ দিয়ে দু’পক্ষ এগোচ্ছে! তবে লক্ষ্য বদলায়নি। ভবিষ্যতে আরও পথ বাকি।’’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীরও বক্তব্য, ‘‘বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসকে পরাস্ত করতে হবে, এটাই আমাদের নীতি। কোনও একটা ভোটের বিষয় নয়, আমরা এই অবস্থান নিয়েই চলছি। কংগ্রেসের জেলা নেতৃত্ব কী চাইবেন, কংগ্রেস কী করবে, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া তাদের অধিকার। তবে বিজেপি ও তৃণমূলকে হারানোর লক্ষ্য নিয়েই গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তি চলবে, এটাই আশা করব।’’