(বাঁ দিক থেকে) রাজু নস্কর, পরেশ পাল, কুণাল ঘোষ, শচীন সিংহ এবং শক্তিপ্রসাদ সিংহ। ছবি: সংগৃহীত।
কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় লিখেছিলেন—‘ফুটপাত বদল হয় মধ্যরাতে’। সে কবিতার নাম ছিল—‘সে বড়ো সুখের সময় নয়, সে বড়ো আনন্দের সময় নয়’! মানিকতলা উপনির্বাচনে ফুটপাথ বদল করলেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ, পরেশ পালেরা। তবে মধ্যদিনে। ফুটপাথ বদল করেই ভোট করালেন তাঁরা। কুণালেরা ‘পাঁচমূর্তি’ যে ভাবে ফুটপাথে চেয়ার পেতে বসেছিলেন, তা নিয়ে অভিযোগ করেছে বিজেপিও। পদ্মশিবিরের অভিযোগ, ওই ফুটপাথ থেকেই ভোট নিয়ন্ত্রণ করেছে তৃণমূল। যদিও বিজেপির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল।
ঘটনাচক্রে, কুণাল মানিকতলার ভোটার নন। তিনি বেলেঘাটার ভোটার। তিনি আবার ছিলেন উপনির্বাচনে তৃণমূলের তরফে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা। সে তিনি দলগত ভাবে যে দায়িত্বই পেয়ে থাকুন, ভোটের দিন তাঁর মানিকতলা বিধানসভা এলাকায় প্রবেশাধিকার ছিল না। নির্বাচনী আইন অনুযায়ী তিনি মানিকতলায় ‘বহিরাগত’। উল্লেখ্য, পরেশ বেলেঘাটার বিধায়ক হলেও তিনি ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। যে ৩১ নম্বর ওয়ার্ড পড়ে মানিকতলার মধ্যে। তৃণমূলের পাখির চোখ ছিল ৩১ নম্বরই। ফলে সেখানে কেমন ভোট হচ্ছে তার তদারকি করছিলেন কুণালেরা। ঘটনা হল, কুণালেরা যে ফুটপাথে বসেছিলেন, সেটি বেলেঘাটার মধ্যে পড়ে। রাস্তার উল্টো দিকটা আবার মানিকতলার অধীনে। ফলে বেলেঘাটার সীমান্তে বসে ভোট পরিচালনা করেছেন তাঁরা।
কুণাল, পরেশের সঙ্গেই ছিলেন ‘বাহুবলী’ নেতা রাজু নস্কর, ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর শচীন সিংহ এবং যুব নেতা শক্তিপ্রসাদ সিংহ। পাশাপাশিই বসেছিলেন তাঁরা। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল একাধিক ওয়ার্ডে ভোট লুট করেছে। কুণালেরা বসে থেকেই তা করিয়েছেন বলে অভিযোগ পদ্মশিবিরের। নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে ৮৯টি বুথে পুনর্নিবাচন দাবি করেছে বিজেপি। পাল্টা কুণাল বলেছেন, ‘‘আমরা নিয়ম মেনে বসেছিলাম। গণতন্ত্রের উৎসব দেখছিলাম। বিজেপি হারবে বলে এ সব প্রলাপ বকছে।’’
মধ্যদিনে কুণালেরা ফুটপাথ বদল করেছেন। তবে কার সময় সুখের সময়, কার আনন্দের সময়, তা স্পষ্ট হয়ে যাবে শনিবার দুপুরের মধ্যেই। ওই দিনই ভোটগণনা।