Vote

অস্ত্রোপচারের আগে ভোটের চিঠিতে চিন্তায় রূপান্তরকামী

ভোটের ডিউটি থেকে অব্যাহতি চেয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসকের দফতরের দ্বারস্থ হলেন গার্ডেনরিচের হরিমোহন ঘোষ কলেজের শিক্ষক দেবজ্যোতি ভট্টাচার্য

Advertisement

রাজীব চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৬:০২
Share:

রূপান্তরকামী এই শিক্ষকের দাবি, প্রয়োজনীয় আশ্বাস মিলেছে। তবে রবিবার পর্যন্ত মেলেনি লিখিত কোনও নির্দেশ। প্রতীকী চিত্র

ভোটের ‘ডিউটি’-তে যোগ দেওয়ার সরকারি নির্দেশ-সহ চিঠি হাতে পেয়েছেন কয়েক দিন আগেই। এ দিকে, আগে থেকেই ‘সেক্স রিঅ্যাসাইনমেন্ট সার্জারি’র দিন ঠিক হয়ে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ভোটের ডিউটি থেকে অব্যাহতি চেয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসকের দফতরের দ্বারস্থ হলেন গার্ডেনরিচের হরিমোহন ঘোষ কলেজের শিক্ষক দেবজ্যোতি ভট্টাচার্য। রূপান্তরকামী এই শিক্ষকের দাবি, প্রয়োজনীয় আশ্বাস মিলেছে। তবে রবিবার পর্যন্ত মেলেনি লিখিত কোনও নির্দেশ।

Advertisement

কলকাতার বন্দর এলাকার বাসিন্দা দেবজ্যোতি কলেজের শারীরবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক। তিনি বলেন, ‘‘অনেক আগে থেকেই আগামী বুধবার দিল্লিতে অস্ত্রোপচারটি হওয়ার দিন ঠিক হয়ে রয়েছে। এই অবস্থায় নির্বাচনী ডিউটির চিঠি আসায় সমস্যায় পড়েছি।’’ তিনি জানান, কয়েক দিন আগে কলেজে একটি চিঠি আসে। তাতে বলা হয়, আগামী বিধানসভা ভোটে তাঁকে পোলিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করতে হবে। দেবজ্যোতির কথায়, ‘‘ভোটের ডিউটি করতে গেলে অস্ত্রোপচার করা যাবে না। কারণ, অস্ত্রোপচারের পরে আমি কয়েক মাস কাজ করতে পারব না। অথচ এর জন্যই গত দু’বছর ধরে টানা ‘হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি’ চলেছে। কী করব ভেবে পাচ্ছি না। সব তথ্য জানিয়ে জেলাশাসকের দফতরে ভোটের ডিউটি থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদনপত্র জমা দিয়েছি।’’ গত শুক্রবার দেবজ্যোতি গিয়েছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসকের দফতরে। তিনি বলেন, ‘‘দফতরের এক আধিকারিক আমাকে আশ্বস্ত করেছেন। তবে ডিউটি থেকে অব্যাহতির কোনও লিখিত নির্দেশ এখনও পাইনি।’’

দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক অন্তরা আচার্য বলেন, ‘‘অনেকেই নির্বাচনের ডিউটি থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেন। ওঁকেও করতে হবে। আমরা প্রতিটি আবেদনপত্র খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নিই। ওই শিক্ষক চিকিৎসা সংক্রান্ত তথ্য-সহ আবেদন করলে প্রশাসন নিশ্চয়ই তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করবে।’’

Advertisement

এ দিকে, আগামী কাল, মঙ্গলবারই দেবজ্যোতির দিল্লি যাওয়ার কথা। ওই শিক্ষকের কথায়, ‘‘অস্ত্রোপচারের পরে বিশ্রাম নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আবেদনপত্রে লিখেছি। চিকিৎসা সংক্রান্ত সব নথিও জেলাশাসকের দফতরে জমা দিয়েছি। এই অস্ত্রোপচারের জন্য আমি দীর্ঘদিন ধরে মানসিক প্রস্তুতি নিয়েছি। এখন সেটি বাতিল করা সম্ভব নয়। এতে আমার শরীরের উপরে প্রভাব পড়বে।’’

রাজ্য ট্রান্সজেন্ডার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের ভাইস চেয়ারপার্সন মানবী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জেলাশাসকের দফতর থেকে যখন আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, তখন দুশ্চিন্তার কোনও কারণ নেই। ওই শিক্ষক আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমরা বোর্ডের তরফ থেকে যা সাহায্য করার, করব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement