সংগঠনের তরফে দুপুর ১টা নাগাদ সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে মিছিল করবেন অ্যাপ-ক্যাব এবং ট্যাক্সির চালকেরা। নিজস্ব চিত্র
আজ, সোমবার প্রধানমন্ত্রী আসছেন রাজ্যে। আর তাঁর সফরের দিনেই ২৪ ঘণ্টার ধর্মঘটে শামিল হচ্ছেন ট্যাক্সি এবং অ্যাপ-ক্যাব চালকদের একটি অংশ। ফলে পথে হলুদ ট্যাক্সি ও অ্যাপ-ক্যাবের সংখ্যা কম থাকবে বলে আশঙ্কা। দুপুরের দিকে অ্যাপ-ক্যাব এবং ট্যাক্সিচালক সংগঠনের প্রতিনিধিরা আইন অমান্য কর্মসূচির ডাক দেওয়ায় যাত্রী-দুর্ভোগ বাড়তে পারে।
বাম সংগঠন ট্যাক্সি অপারেটর্স কোঅর্ডিনেশন কমিটির অভিযোগ, ডিজ়েলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির ফলে সঙ্কটে পড়েছেন ট্যাক্সি এবং অ্যাপ-ক্যাব চালকেরা। লিটার প্রতি দাম ৮৪ টাকা হওয়ায় পরিষেবা স্বাভাবিক রাখা প্রায় অসম্ভব। অথচ ভাড়া বৃদ্ধির দাবি নিয়ে রাজ্য সরকারকে একাধিক বার চিঠি দিলেও কোনও সাড়া মেলেনি। তাই ধর্মঘটের পথে যেতে হয়েছে বলে দাবি এআইটিইউসি অনুমোদিত ওই সংগঠনের। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নওলকিশোর শ্রীবাস্তব বলেন, “সাধারণ মানুষের উপরে বোঝা না চাপানোর কথা বলছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু, ট্যাক্সি এবং অ্যাপ-ক্যাব চালকেরা কি ভিন্ গ্রহের বাসিন্দা? তাঁদের চলবে কী ভাবে?” তাঁর দাবি, সমস্যার কথা জানিয়ে রাজ্যকে পাঁচটি চিঠি দেওয়া হলেও সরকারের তরফে সাড়া মেলেনি।
এ দিকে ডিজ়েলের অস্বাভাবিক দামের সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে হলুদ ট্যাক্সির চালকদের বেশিরভাগই আর মিটারে যাত্রী নিতে চান না। যাত্রীর সঙ্গে ভাড়া নিয়ে আগেই রফা করে নিতে হয় বলে দাবি ওই চালকদের। ভাড়া সমস্যা না মেটায় বিমানবন্দর, হাওড়া ও শিয়ালদহের প্রিপেড ট্যাক্সি বুথেও যাত্রী তুলতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন চালকেরা। এই সঙ্কটের সুযোগ নিয়ে সেখানেও দালালচক্রের দাপাদাপি বাড়ছে বলে অভিযোগ ট্যাক্সি সংগঠনগুলির। এমনিতেই করোনা পর্বে দীর্ঘদিন ব্যবসা বন্ধ থাকায় এবং আনলক পর্বে যাত্রী কম পাওয়ায় ক্ষতি হয়েছে অ্যাপ-ক্যাব চালকদেরও। যাত্রীদের কাছ থেকে বুকিং ফি-সহ বিভিন্ন অতিরিক্ত খরচ ক্যাব সংস্থা আদায় করলেও চালকের উৎসাহ ভাতা (ইনসেন্টিভ) দেওয়ার ক্ষেত্রে কারচুপি করছে সংস্থাগুলি। এমনই অভিযোগ ওই বামপন্থী সংগঠনের।
চাহিদার উপরে নির্ভর করে অ্যাপ-ক্যাবের ভাড়া ওঠা-নামা করে। ফলে কখনও যেমন অত্যধিক বেশি ভাড়া দিতে হয় যাত্রীকে। তেমনই চাহিদা কম থাকলে ভাড়া এতটাই কম হয় যে সেই টাকায় তেলের দামও ওঠে না বলে দাবি চালকদের। ভাড়া নির্ধারণের এই জটিল প্রক্রিয়া এড়িয়ে সমতা আনার দাবিও তুলছে সংগঠন। এ জন্য প্রতি কিলোমিটারে কুড়ি টাকা ভাড়া নির্ধারণের দাবি করা হয়েছে।
আজ, সংগঠনের তরফে দুপুর ১টা নাগাদ সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে মিছিল করবেন অ্যাপ-ক্যাব এবং ট্যাক্সির চালকেরা। শাসকদল ঘনিষ্ঠ ট্যাক্সিচালক সংগঠন ‘প্রোগ্রেসিভ ট্যাক্সি মেন’স ইউনিয়ন’ অবশ্য এই ধর্মঘটের বিরোধিতা করেছে। এ দিন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শম্ভুনাথ দে বলেন, “ডিজ়েলের দাম যে ভাবে বাড়ছে তাতে ট্যাক্সি এবং অ্যাপ-ক্যাব চালকেরা সত্যিই সমস্যায় পড়েছেন। ভাড়া বাড়ানো জরুরি। তবে আমরা করোনা পরিস্থিতিতে ধর্মঘটের বিরুদ্ধে। আজ পরিষেবা সচল রাখতে আমরা তৎপর থাকব।”