চিকিৎসককে প্রতারণায় অভিযুক্ত চার

শুক্রবার রাতের ওই ঘটনায় তিলজলার বাসিন্দা ওই চিকিৎসক যুবকদের জানান, তাঁর কাছে এত টাকা নেই। কিন্তু তিনি বাড়ি গেলে পাঁচ লক্ষ টাকা জোগাড় করতে পারবেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:৫৯
Share:

প্রতীকী চিত্র।

বাড়িতে রোগী দেখতে এলে মিলবে মোটা পারিশ্রমিক, এক চিকিৎসককে এ ভাবেই শুক্রবার ডেকে আনার পরে তাঁর নগ্ন ছবি তুলে ব্ল্যাকমেল করার অভিযোগ গ্রেফতার হল দুই যুবক। ধৃতদের নাম সিদ্ধার্থ আচার্য ও অভিষেক চট্টোপাধ্যায় ওরফে অভিজিৎ পাল। তাদের বাড়ি দমদম ও বরাহনগরে। পরে আদালতে আত্মসমর্পণ করে আরও দু’জন।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, ফোন পেয়ে দক্ষিণ দমদম এলাকায় এক রোগিণীর বাড়ি হাজির হয়েছিলেন ওই চিকিৎসক। রোগিণী তাঁর হাতে পুরনো একটি প্রেসক্রিপশন দিলে সন্দেহ প্রকাশ করেন চিকিৎসক। অভিযোগ, আচমকাই রোগিণী ওই চিকিৎসককে জড়িয়ে ধরে। তখনই সেখানে প্রবেশ করে তিন যুবক। তাদের এক জন পুলিশের ‘খাকি’ উর্দি পরা ছিল বলে দাবি। মহিলার সঙ্গে অসভ্যতা করা হচ্ছে ওই অভিযোগে চিকিৎসককে ঘিরে ধরে তারা। এমনকি চিকিৎসককে নগ্ন করে যুবকেরা সেই ছবি তোলে বলেও অভিযোগ। ১০ লক্ষ টাকা না পেলে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানোর হুমকি দেওয়া হয় বলে পুলিশকে অভিযোগে জানানো হয়।

শুক্রবার রাতের ওই ঘটনায় তিলজলার বাসিন্দা ওই চিকিৎসক যুবকদের জানান, তাঁর কাছে এত টাকা নেই। কিন্তু তিনি বাড়ি গেলে পাঁচ লক্ষ টাকা জোগাড় করতে পারবেন। বাকি টাকা স্ত্রীর গয়না দিয়ে মেটাবেন। অভিযোগ, তখনকার মতো তাঁর কাছে থাকা ১৫ হাজার টাকা নিয়ে নেয় যুবকেরা। তদন্তকারীরা জানান, এর পরেই দুই যুবক দক্ষিণ দমদমের পঞ্চাননতলা থেকে চিকিৎসককে গাড়ি করে তিলজলায় নিয়ে যান। টাকা আনছি, বলে চিকিৎসক তাদের দাঁড় করিয়ে সোজা হাজির হন তিলজলা থানায়। সব শুনে থানার একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুই যুবককে পাকড়াও করে।

Advertisement

তদন্তকারীরা জানান, দক্ষিণ দমদমে হলেও তিলজলা থানায় চিকিৎসক প্রতারণা, ভয় দেখানো-সহ একাধিক ধারায় অভিযোগ জানালে ওই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। রাতেই পুলিশের উর্দি পরা যুবক নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় ওরফে সোমনাথ দাসের বরানগরের বাড়িতে হানা দেন তদন্তকারীরা। বাড়ি থেকে উর্দি উদ্ধার হলেও খোঁজ মেলেনি ‘ভুয়ো’ ওই পুলিশ অফিসারের। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে তাদের মোবাইল।

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের শনিবার আলিপুর আদালতে তোলা হয়। সেই সঙ্গে ‘ভুয়ো’ পুলিশ সোমনাথ ও শাওনা আচার্য নামের সেই রোগিণী এ দিনই আদালতে আত্মসমর্পণ করেছে। বিচারক চার জনকে শর্তাধীন জামিন মঞ্জুর করেন।

প্রাথমিক তদন্তের পরে তদন্তকারীরা জানান, সোমনাথ ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট এলাকায় সিভিক ভলান্টিয়ারের কাজ করত। প্রতারণার অভিযোগ ওঠায় তাকে কাজ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। ধৃতেরা সকলেই একটি প্রতারণা চক্রের সঙ্গে যুক্ত। তাদের বিরুদ্ধে কোন কোন থানায় অভিযোগ রয়েছে তাও জানার চেষ্টা চলছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement