প্রতীকী ছবি
বাজার খোলা রোজই। কেনাকাটাতেও কোনও বিধিনিষেধ নেই। লকডাউন খাতায়-কলমে শুরু হচ্ছে বেলা ১২টায়। কিন্তু তখনও বাজারের ভিড়ে রাশ টানা যাচ্ছে না। দূরত্ব-বিধি মানারও বালাই নেই। সোমবার দক্ষিণ দমদম এবং দমদম পুর এলাকার সকালের বাজারে গিয়ে দেখা গেল, সেখানে ক্রেতাদের ভিড়ে পা রাখাই দায়।
বেলা ১২টা থেকে দোকান-বাজার বন্ধ রাখার নির্দেশ জারি হলেও কোনও কোনও দোকান খোলা রইল তার পরেও। তবে পুলিশি টহলে অটো-টোটো-রিকশা-বাইকের দাপট কিছুটা কমল অন্য দিনের তুলনায়। কয়েকটি রাস্তা পুলিশ গার্ডরেল দিয়ে বন্ধ করে দেওয়ায় যান চলাচলেও নিয়ন্ত্রণ এল। সন্ধ্যায় দোকান-বাজার না খোলায় সেই জমায়েতে কিছুটা রাশ টানা গিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, লকডাউন না মানলে আগামী দিনে তারা আরও কঠোর পদক্ষেপ করবে।
বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এমনিতেই সকাল ১০টার পরে আনাজ ও মাছের বাজারে ভিড় হাল্কা হয়ে যায়। তবে অন্যান্য দোকানে ভিড় থাকে। ব্যবসায়ী ও বিক্রেতাদের কথা ভেবে ১১টা পর্যন্ত বাজার খোলা রাখার নির্দেশ জারি করেছিল পুরসভা। পুলিশের তরফে আরও এক ঘণ্টা ছাড় দেওয়া হয়। কিন্তু সকালের বাজারে কোনও বিধিনিষেধ না থাকায় ভিড় ঠেকানো যায়নি।
নাগেরবাজার, গোরাবাজার, ক্যান্টনমেন্ট, দমদম রোড, শ্যামনগর— সর্বত্রই গা ঘেঁষাঘেঁষি করে কেনাকাটার ছবি চোখে পড়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, সকালের বাজারে দূরত্ব-বিধি এবং ভিড়ে নজরদারি থাকছে না কেন? বিক্রেতারা জানিয়েছেন, ফের লকডাউন ঘোষণা হওয়ায় কেউ কেউ বেশি করে জিনিসপত্র কিনে রাখছেন। ফলে বাজারে অনেক বেশি সময় কাটিয়েছেন তাঁরা। যাঁদের অনেকের আবার মাস্কও ছিল না।
এ দিন বেলা ১২টার পরে পুলিশকে রাস্তায় নামতে দেখা যায়। নাগেরবাজার এলাকায় বেশ কিছু দোকান তখনও খোলা ছিল। সেগুলি বন্ধ করে দেয় পুলিশ। দমদম ক্যান্টনমেন্ট, দমদম রোড, গোরাবাজার এলাকায় দুপুর পর্যন্ত খোলা ছিল বেশ কয়েকটি দোকান। এলাকার বাসিন্দারা ফোনে থানায় অভিযোগ জানানোর পরে পুলিশ গিয়ে সেগুলি বন্ধ করে দেয়। তবে অনেক ব্যবসায়ী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই দোকান বন্ধ করেছেন। পুলিশ টহলদারি শুরু করায় রাস্তায় যানবাহনও বিশেষ দেখা যায়নি।
বেলা বাড়তেই অটো এবং রিকশা বন্ধ হয়ে যায়। বাইকও নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করে পুলিশ। বড় রাস্তার সঙ্গে যুক্ত বেশ কিছু ছোট রাস্তা পুলিশ গার্ডরেল দিয়ে বন্ধ করে দেয়। তবে সকালের বাজারে ভিড় নিয়ে প্রশাসন এবং পুরসভার চিন্তা থেকেই গেল। এলাকার বাসিন্দাদের প্রশ্ন, “সকালের বাজারের ভিড় যদি নিয়ন্ত্রণ করা না যায়, তা হলে লকডাউন করে কী লাভ হবে? সংক্রমণ তো সেই ছড়াবেই।”