শুধু ত্বক নয়, অ্যালার্জি চোখেও হতে পারে। ছবি: সংগৃহীত।
চোখ থেকে জল পড়ছে। চোখ ফুলে লাল হয়ে গিয়েছে কিংবা ঘন ঘন চোখ চুলকাচ্ছে।
চোখের এই ধরনের সমস্যার কথা শুনলে অভিজ্ঞেরা প্রথমেই স্ক্রিনটাইম কমানোর পরামর্শ দেবেন। তাতে হয়তো খানিকটা উপকার হবে। লক্ষণ দেখে অনেকে হয়তো ‘ড্রাই আইজ়’ ভেবে ভুল করবেন। তবে শীতকালে চোখের এই ধরনের সমস্যার দায় শুধু স্ক্রিনটাইমের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া যাবে না। এটি ঋতুকালীন অ্যালার্জির কারণেও হতে পারে।
চিকিৎসকেরা বলছেন, এই সময়ে বাতাসে পোলেন, ধূলিকণার সঙ্গে নানা ধরনের ভাইরাসের পরিমাণও বাড়তে থাকে। আবার, আর্দ্রতাও কমে যায়। ফলে চোখে নানা রকম অস্বস্তি হতে থাকে। এর সঙ্গে কারও কারও আবার হাঁচি, নাক থেকে অনবরত জল পড়ার মতো উপসর্গও দেখা যায়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় যাকে ‘অ্যালার্জিক কনজাংটিভাইটিস’ বলা হয়। চোখের চিকিৎসক সুমিত চৌধুরী বলেন, “সর্দি, কাশি বা কোনও ধরনের ইনফেকশন থেকেও চোখ লাল হতে পারে। তবে শীতে চোখ লাল হওয়ার প্রবণতা বেশির ভাগটাই অ্যালার্জি থেকে। শুধু জলের ঝাপটা দিয়ে চোখ-মুখ ধুলে সে ক্ষেত্রে সুরাহা না-ও মিলতে পারে। তখন ‘অ্যান্টি অ্যালার্জি’ বা ‘লুব্রিকেটিং আই ড্রপস’ ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়।”
আর কী কী থেকে চোখে এই ধরনের সমস্যা হতে পারে?
১) প্রচণ্ড শীতে আগুনের ধারে দাঁড়াতে ভাল লাগে। কাঠ, কয়লা, গাছের শুকনো পাতা বা কাগজ পুড়িয়ে যে ধোঁয়া নির্গত হয়, তা চোখের সংস্পর্শে এলে চোখ লাল হয়ে যেতে পারে। চোখ থেকে ঘন ঘন জল পড়তে পারে।
২) শীতের সময়ে লোমশ পোষ্যদের গা থেকে খোসার মত মৃত কোষ উঠতে শুরু করে। ত্বক বা চোখের খুব কাছাকাছি পোষ্যেরা এলে সেখান থেকেও অ্যালার্জি হতে পারে।
৩) স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় পুরনো ঘরের দেওয়াল, আসবাবে ছত্রাকের বাড়বাড়ন্ত দেখা যায়। চোখে অ্যালার্জি হওয়ার নেপথ্যে এটির ভূমিকাও কম নয়।
৪) শীতকালে বাতাসে আর্দ্রতা একেবারে কমে যায়। বাড়তে থাকে ধূলিকণার স্তর। বাইরে তো বটেই, ঘরের ভিতরেও তাদের আনাগোনা রয়েছে। ধুলো কোনও ভাবে চোখে প্রবেশ করলে সমস্যা হতে পারে।
৫) অনেকেই হয়তো জানেন না, শীতের পোশাক, অর্থাৎ উল থেকেও কিন্তু অ্যালার্জি হতে পারে। এ ক্ষেত্রে প্রথমেই হয়তো চোখে সমস্যা হয় না। ত্বক থেকে তা ক্রমশ চোখে ছড়ায়।