ফাইল চিত্র।
আমপানের মতোই ইয়াস-এর তাণ্ডবও কি তছনছ করে দেবে ফুলের সব গাছ? এই চিন্তাই এখন কুরে কুরে খাচ্ছে মল্লিকঘাট ফুলবাজারের ব্যবসায়ীদের। তাঁরা জানাচ্ছেন, গত বছরের ঘূর্ণিঝড়ে তাঁদের সমস্ত ফুলগাছ কার্যত মাটির সঙ্গে মিশে গিয়েছিল। ফের গাছ লাগিয়ে এক বছর ধরে পরিচর্যা করায় এখন আবার ফুল মিলছে। বিক্রিও হচ্ছে কিছুটা। কিন্তু এই বছরও যদি ঘূর্ণিঝড়ের দাপট একই রকম থাকে, তা হলে যে লোকসানের সম্মুখীন হতে হবে, সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানো খুবই কঠিন হবে বলে আশঙ্ক চাষিদের। সেই সঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের পরে বাজারেও ফুল মিলবে না।
ফুলচাষিরা জানাচ্ছেন, গত বার আমপানের সময়ে করোনার জন্য পুরো লকডাউন ছিল। ফলে বাজারে ফুলের বিক্রি কার্যত ছিল না। চাষিদের বাগান থেকে ফুল তুলে ফেলে দিতে হচ্ছিল। সেই অবস্থায় আমপানের ধাক্কায় ভীষণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ফুলের ব্যবসা।
এই বছরও করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের জেরে কার্যত লকডাউন চলছে। তবে তিন ঘণ্টার জন্য বাজার খোলা থাকায় কিছু ফুল বিক্রি হচ্ছে। ধর্মীয় অনুষ্ঠান, বিয়েবাড়ির জন্য ফুলের চাহিদা রয়েছে। মল্লিকঘাট ফুলবাজারের কয়েক জন ফুলচাষি জানান, এ বারও আগের মতো ক্ষতি হলে তাঁদের পক্ষে ব্যবসা চালানো কঠিন হয়ে পড়বে। পর পর ভারী লোকসান সামলানোর ক্ষমতা তাঁদের নেই বলে জানাচ্ছেন চাষিরা।
চাষিরা জানাচ্ছেন, ফুলচাষের মূল জেলাগুলি হল পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া এবং নদিয়া। এই জেলাগুলির মধ্যে বিশেষ করে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনা এবং হাওড়ার উপরে যদি ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব বেশি পড়ে তা হলে এই বছরও ফুলচাষের ক্ষতি হবে। শুধু ঝড় নয়, প্রবল বৃষ্টির জেরেও ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষিরা।
সারা বাংলা ফুলচাষি ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ নায়েক বলেন, “বেশির ভাগ ফুলগাছ যেমন রজনীগন্ধা, গাঁদা, অপরাজিতা, দোপাটি সবই নরম প্রকৃতির গাছ। শুধু গোলাপ ও জবা একটু শক্ত কাণ্ডের গাছ। তবে কোনও গাছই ঘূর্ণিঝড়ের শক্তির সঙ্গে লড়তে পারবে না। ইয়াস যতটা শক্তিশালী হবে বলে ভাবা হচ্ছে, তেমনটাই হলে সব গাছ মাটিতে মিশে যাবে।” নারায়ণবাবু জানান, ঘূর্ণিঝড় নিয়ে তথ্য থাকলেও গাছ বাঁচানোর কোনও উপায় নেই। চাষিরা তাই অসহায়। ঝড় এলে চোখের সামনে বাগান নষ্ট হতে দেখা ছাড়া তাঁদের আর কিছুই করার নেই।