নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় শনিবার এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর হাতে গ্রেফতার হয়েছেন কুন্তল। —নিজস্ব চিত্র।
নিয়োগ দুর্নীতিতে তাঁর নাম জড়িয়েছে। শনিবার সকালে গ্রেফতারও হয়েছেন। তবে এ সবের সঙ্গে দলকে কোনও ভাবে যুক্ত করতে চাইছেন না যুব তৃণমূলের নেতা কুন্তল ঘোষ। শনিবার এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর হাতে গ্রেফতার হওয়া কুন্তলের আরও অভিযোগ, তাঁর ছেলেকে অপহরণ করা হবে বলে হুমকিও দিয়েছেন তাপস মণ্ডল। কুন্তলকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে শনিবার হাজির করানো হয়। তাঁকে ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ইডি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
গ্রেফতারের পর তাপসের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করেছেন কুন্তল। তিনি বলেন, ‘‘তাপস ৫০ লক্ষ টাকা ঘুষ চেয়েছিলেন। তা না দেওয়ায় আমার এই হাল।’’ নিরাপত্তার ঘেরাটোপে আদালত থেকে বেরোনোর সময় কুন্তল বলেন, ‘‘এই মামলায় আমার দলকে কোনও ভাবে যুক্ত করবেন না।’’ পরে ইডি দফতরে গিয়ে কুন্তল দাবি করেন তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কাছে তাপস দাবি করেছিলেন, চাকরির জন্য যাঁদের কাছ থেকে টাকা তোলা হত, তা তাঁর অফিসে আনা হত। সেই টাকা তাঁর ‘নির্দেশ’ মতোই পৌঁছে যেত হুগলির তৃণমূল যুবনেতা কুন্তলের কাছে। তবে কুন্তলের দাবি, ‘‘অফলাইনে ভর্তি নিয়ে আমি মুখ খুলব বলে কিছু দিন আগেও তাপস আমাকে একটাই কথা বলে এসেছে— আমার বাচ্চাকে কিডন্যাপ (অপহরণ) করবে।’’ এ ছাড়া, ৫০ লক্ষ টাকা ঘুষের অভিযোগ প্রসঙ্গে কুন্তলের অভিযোগ, তাঁর কাছ থেকে তাপস ৫০ লক্ষ টাকা ঘুষও চেয়েছিলেন।
তাপস দাবি করেছিলেন, চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা তুলে তা কুন্তলকে দিয়েছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা গোপাল দাস। গোপাল তাঁর পরিচিত বলে জানান তাপস। তাকে কুন্তলের কাছে পাঠিয়েছিলেন তিনি। তাপসের কথায়, ‘‘গোপাল অনেকের থেকে টাকা তুলেছিল। তার মধ্যে আমার পড়ুয়ারাও ছিল। কুন্তলের ফ্ল্যাটেও গিয়েছিলাম। গত ৩-৪ মাস ধরে যাইনি।’’
ধৃত কুন্তলের হুগলি ছাড়াও অন্য জেলাতেও একাধিক বিএড কলেজ আছে বলে জানা গিয়েছে। সেই সুবাদেই মানিক ভট্টাচার্য-‘ঘনিষ্ঠ’ বিএড কলেজ সংগঠনের সভাপতি তাপসের সঙ্গে পরিচয় হয় কুন্তলের। সেই তাপসই নাকি তদন্তকারীদের কাছে জানিয়েছেন, শিক্ষক নিয়োগের নামে ১৯ কোটি টাকা কুন্তলের কাছে গিয়েছে। যদিও সিবিআই সূত্রে এই দাবির সমর্থন মেলেনি। তবে তাপসকে তিন বারের বেশি সিজিও কমপ্লেক্সে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদের পর চিনার পার্কের একটি আবাসন থেকে কুন্তলকে গ্রেফতার করেছে ইডি।