Tasnia Farin Interview

সম্পর্কে রয়েছেন কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রাখতে চান ‘কারাগার’ খ্যাত তাসনিয়া ফারিণ

অতনু ঘোষ পরিচালিত ‘আরো এক পৃথিবী’তে বাংলাদেশের চর্চিত অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণ। ছবি মুক্তির আগে সম্প্রতি দক্ষিণ কলকাতার এক কাফেতে আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে আড্ডায় তাসনিয়া।

Advertisement

অভিনন্দন দত্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২৩ ১৮:০৮
Share:

এই প্রথম এ পার বাংলার ছবিতে অভিনয় করলেন বাংলাদেশের অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণ। ছবি: সংগৃহীত।

প্রশ্ন: নিজের ছবির জন্য এ বারে কলকাতায় এসেছেন। কী রকম অনুভূতি?

Advertisement

তাসনিয়া: আপনাদের শহরে আসতে ভালই লাগে। মনে হয় যেন নিজের দেশেই রয়েছি (হাসি)। যত দিন এগিয়ে আসছে মনের মধ্যে ভয় চেপে বসছে। কলকাতায় প্রথম ছবি। আগে তো কখনও ভাবিনি। তাই নিজেকে সৌভাগ্যবানও মনে হচ্ছে।

প্রশ্ন: দিন কয়েক আগে আপনার পায়ে তো চোট লেগেছিল। এখন কেমন আছেন?

Advertisement

তাসনিয়া: এখন অনেকটাই ভাল আছি। কিছু ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। আশা করি, সেটা সময়ের সঙ্গে মিলিয়ে যাবে।

প্রশ্ন: পরিচালকের মুখেই শুনেছি যে, ছবিতে আপনার চরিত্রটা বেশ কঠিন।

তাসনিয়া: আসলে ‘লেডিজ় অ্যান্ড জেন্টলমেন’ ওয়েব সিরিজ়ে আমার অভিনয় দেখে অতনুদা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। প্রতীক্ষা (ছবিতে তাসনিয়ার চরিত্র)। ছোট থেকেই কঠিন পরিস্থিতিতে বড় হয়েছে। সময়ের অনেক আগেই পরিণত হতে হয় ওকে। খুবই অন্তর্মুখী চরিত্র। তাই সংলাপের তুলনায় আমাকে অভিব্যক্তির উপর অনেক বেশি জোর দিতে হয়েছিল।

‘কারাগার’ ওয়েব সিরিজ়ের একটি দৃশ্যে তাসনিয়া। ছবি: সংগৃহীত।

প্রশ্ন: টালিগঞ্জের বাংলা ছবি দেখেন?

তাসনিয়া: সময় পেলেই দেখি।

প্রশ্ন: পছন্দের কোনও অভিনেতা বা অভিনেত্রী?

তাসনিয়া: (একটু ভেবে) অনেকেই রয়েছেন। প্রসেনজিৎ, ঋতুপর্ণার ছবি দেখেছি। ঋত্বিক চক্রবর্তীর অভিনয় খুব পছন্দ। তবে উত্তমকুমার এবং সুচিত্রা সেনের জুটিটা আমার খুব পছন্দের। ওঁদের প্রায় সব ছবিই দেখেছি।

প্রশ্ন: ‘কারাগার’-এর পর টালিগঞ্জ থেকে আপনার কাছে নিশ্চয়ই প্রস্তাব আসা শুরু হয়েছে?

তাসনিয়া: কিছু প্রস্তাব এসেছে। কিন্তু এখনও পছন্দ হয়নি। তা ছাড়া আমি সংখ্যার তুলনায় কাজের গুণগত মানের প্রতি বেশি সচেতন। মনের কথা শুনে চলি। এ রকমও হয়েছে যে, চিত্রনাট্যের শুধুমাত্র একটা লাইন পড়েই কাজে সম্মতি দিয়েছি।

‘লেডিজ় অ্যান্ড জেন্টলমেন’ ওয়েব সিরিজ়ের একটি দৃশ্যে তাসনিয়া। ছবি: সংগৃহীত।

প্রশ্ন: তাই নাকি! শেষ এ রকম কবে ঘটেছিল মনে আছে?

তাসনিয়া: অতনুদার ছবিটাই। ছবিতে একটা লাইন আছে— ‘‘আমি জীবন থেকে পালিয়ে যাব বলে ঘর ছাড়িনি, জীবনকে আঁকড়ে ধরব বলে ঘর ছেড়েছি।’’ এই লাইনটা আমার মনে গেঁথে গিয়েছিল।

প্রশ্ন: ইন্ডাস্ট্রিতে আপনি এক অর্থে নতুন। নায়িকা মানেই তাঁকে নিয়ে বিতর্ক তৈরির সম্ভাবনা। আপনি কি প্রস্তুত?

তাসনিয়া: ব্যক্তিগত জীবনকে আমি প্রকাশ্যে বা সমাজমাধ্যমে নিয়ে আসি না। কাজের প্রতি সততা বজায় রাখার চেষ্টা করি। এখনও তো আমাকে নিয়ে কোনও বিতর্ক কানে আসেনি। আর ভবিষ্যতে কী হবে, সেটা নিয়ে আমি খুব একটা ভাবি না।

প্রশ্ন: জয়া আহসান, নুসরত ফারিয়ারা দুই বাংলায় সমান তালে কাজ করেন ওঁদের সঙ্গে আলাপ আছে?

তাসনিয়া: ইন্ডাস্ট্রিতে আমরা সবাই সহকর্মী। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা হয়, কথা হয়। কিন্তু সেই অর্থে ইন্ডাস্ট্রিতে কারও সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব নেই।

‘আরো এক পৃথিবী’ ছবিতে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাসনিয়া। ছবি: সংগৃহীত।

প্রশ্ন: সে কী! কেন জানতে পারি?

তাসনিয়া: আসলে আমি একটু নিজের মতো থাকতে পছন্দ করি। ওই যে বললাম ব্যক্তিগত আর পেশাদার জীবনকে মিশতে দিই না। ব্যক্তিগত জীবনে ইন্ডাস্ট্রির কোনও বন্ধু নেই। আবার পেশাদার জীবনেও ব্যক্তিগত জীবনের কোনও বন্ধু নেই।

প্রশ্ন: বিগত কয়েক বছরে বাংলাদেশের ছবি নিয়ে যে উন্মাদনা শুরু হয়েছে, তা নিয়ে আপনার কী মতামত?

তাসনিয়া: এটা আমাদের দেশের জন্য খুবই ভাল সময়। বাংলাদেশের ছবি আন্তর্জাতিক মঞ্চে পৌঁছে গিয়েছে। কাঁটাতার পেরিয়ে দুই বাংলার মানুষ একসঙ্গে কাজ করছেন। এই তো চঞ্চলদা (চৌধুরী) তো এখন কলকাতাতেই শুটিং করছেন।

প্রশ্ন: চঞ্চল চৌধুরীর সঙ্গে আপনার সম্পর্ক কী রকম?

তাসনিয়া: খুবই ভাল। ‘কারাগার’-এর সময় থেকেই। অতনুদার ছবিতে সুযোগ পাওয়ার পর দাদা খুব খুশি হয়েছিলেন। বলেছিলেন মন দিয়ে কাজটা শেষ করতে।

প্রশ্ন: অল্প সময়ের মধ্যেই মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও অতনু ঘোষের সঙ্গে কাজ। চঞ্চল চৌধুরী, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো অভিনেতাদের সঙ্গে স্ক্রিন স্পেস। এই সুযোগগুলো কি কনফিডেন্স বাড়িয়েছে, না কি দায়িত্ব?

তাসনিয়া: দেখুন, ভাল পরিচালক বা অভিনেতাদের সঙ্গে যত বেশি কাজ করব, তত বেশি শিখতে পারব। যেমন কৌশিকদার সঙ্গে কাজ করে বুঝেছি ওঁর জীবনদর্শনটা খুব অন্য রকম। আবার চঞ্চলদা আর এক ধরনের অভিনেতা। আর ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি খুব একটা ভাবি না। বর্তমানে কাজটা ভাল ভাবে করতে পারছি কি না, সেটা আমার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যখন কাজ থাকে না নিজেকে কী ভাবে আরও যোগ্য করে তোলা যায় সেই চেষ্টাই করি।

প্রশ্ন: কী ভাবে?

তাসনিয়া: দেশ-বিদেশের ছবি দেখি। বিভিন্ন ওয়ার্কশপের ভিডিয়ো দেখি। কাজ না থাকলে ঢাকায় বাড়ির বাইরে খুব একটা বেরোতেও পছন্দ করি না। আমি বই পড়তে প্রচণ্ড ভালবাসি। বিশ্ব রাজনীতি নিয়ে জানার চেষ্টা করি।

প্রশ্ন: কম সময়ের মধ্যে সমাজমাধ্যমে আপনার অনুসরণকারীর সংখ্যা তো প্রচুর! রহস্যটা কী?

তাসনিয়া: আমি সৌভাগ্যবান (হাসি)। কারণ মানুষের ভালবাসা না পেলে তো এটা সম্ভব হত না। বিশ্বাস করি প্রত্যেকের একটা ইউনিকনেস থাকে। অনেকের কাছেই শুনেছি, আমার মধ্যে নাকি তাঁরা ‘পাশের বাড়ির মেয়ে’কে খুঁজে পান। সেটা কারণ হতে পারে। আবার হয়তো আমি যে ভাবে সমাজমাধ্যমে নিজেকে তুলে ধরি, সেটাও হয়তো মানুষকে আমার প্রতি আকৃষ্ট করে। আমি ঠিক বলতে পারব না (হাসি)।

প্রশ্ন: অনুরাগীদের সঙ্গে কথা হয়?

তাসনিয়া: সমাজমাধ্যমে কোনও কমেন্ট পড়ার সময় পাই না। সামনে দেখা হলে সেলফি তোলা বা কথা হয়। প্রশংসার পাশাপাশি তাঁরা আমার কাজের গঠনমূলক সমালোচনা করলেও সাদরে গ্রহণ করি।

প্রশ্ন: আপনি কি সিঙ্গল?

তাসনিয়া: ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কিছু বলতে চাই না। এই প্রশ্নের উত্তরটা না হয় একটু ধোঁয়াশার মধ্যেই থাকুক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement