—ফাইল চিত্র
কলকাতায় পুকুর বা জলাশয়ের সংখ্যা ৩৭৭৭টি। তার পাঁচশোটির মতো সরকারের মালিকানাধীন। বাকি সব বেসরকারি। পরিবেশ রক্ষায় পুকুর বাঁচানো জরুরি হলেও বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, বেশির ভাগই জঞ্জালে ভরে অস্তিত্ব হারিয়েছে। ওই সব পুকুর পরিষ্কার করে তার পাড় বাঁধালে তবেই প্রকৃত সংরক্ষণ সম্ভব, মনে করছেন পরিবেশবিদেরা। সে কাজ করতে যে টাকার দরকার, তা পুরসভার ভাণ্ডারে নেই বলে জানিয়েছেন মেয়রই। তা হলে উপায়?
সম্প্রতি পুরকর্তাদের এক বৈঠকে বিষয়টি উঠলে জানানো হয়, ভরাট থেকে বাঁচাতে পুর প্রশাসন সম্প্রতি শহরের ৩২৭টি বেসরকারি পুকুরকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয় (ম্যানেজমেন্ট কন্ট্রোল) ২৫ বছরের জন্য। উদ্দেশ্য পুকুর পরিষ্কার করে সেখানে মাছচাষ করা হবে। এ জন্য দরপত্র ডাকাও হয়েছিল। কিন্তু পাঁচ বারেও সাড়া মেলেনি। মেয়র পারিষদ (পরিবেশ) স্বপন সমাদ্দার বলেন, ‘‘স্থির হয়েছে, বাসিন্দারা চাইলে পুকুর লিজও নিতে পারবেন। এ জন্য ন্যূনতম ভাড়া দিতে হতে পারে। প্রধান শর্ত হবে পুকুর পরিষ্কার রাখা।’’ স্বপনবাবু জানান, পুকুর পড়ে থেকে ভরাটের প্রবণতা বাড়ছে। তাই মেয়রের নির্দেশে বরো চেয়ারম্যান এবং কাউন্সিলরদের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে উৎসাহীদের চিহ্নিত করতে।
যদিও রাজ্যের স্বরোজগার যোজনা দফতরের মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে মনে করেন, ‘‘পরিবেশ রক্ষায় পুকুরের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। শহরের নিকাশির উন্নয়নে যেমন এশীয় উন্নয়ন ব্যাঙ্ক, বিশ্ব ব্যাঙ্ক ঋণ দিয়ে থাকে। পুকুরের জন্যও তা চাওয়া যায় কি না, পুর প্রশাসন ভেবে দেখতে পারে।’’ যদিও স্বপনবাবুর বক্তব্য, ‘‘শহরের বেশির ভাগ পুকুর ব্যক্তিগত মালিকানাধীন। এডিবি, বিশ্ব ব্যাঙ্ক ব্যক্তিগত মালিকানাধীন পুকুরের জন্য টাকা বরাদ্দ করবে না বলেই জানি।’’ সাধনবাবু এবং স্বপনবাবু দু’জনেরই বক্তব্য, কলকাতার পরিবেশ রক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ দফতরের শীর্ষে পরিবেশ বিশেষজ্ঞ অফিসারকে রাখা দরকার। অথচ সেই পদে এক জন করে সিভিল বা মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার কাজ করছেন। স্বপনবাবু জানান, পরিবেশ বিশেষজ্ঞকে মাথায় রেখেই দফতর চালানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।